সোমবার, ২ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

অপগুণ অহংকার

মাওলানা আবদুর রশিদ

অহংকার এমনই একটি অপগুণ যা থেকে সবারই দূরে থাকা উচিত। নিজেকে অন্য মানুষের চেয়ে শ্রেষ্ঠ এবং অন্যকে নিজের চেয়ে অধম ও ছোট মনে করে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা, ইসলামের দৃষ্টিতে গর্হিত কাজ। এ ধরনের ঔদ্ধত্য প্রকাশ কবিরা গুনাহ। অহংকারের নিন্দা ও অহংকারীর প্রতি ধিক্কার জানিয়ে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করা হয়েছে ‘যারা হিসাব দিবসের প্রতি বিশ্বাস করে না, এমন প্রত্যেক অহংকারী থেকে আমি আমার ও তোমাদের প্রভুর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করে নিয়েছি।’ পবিত্র কোরআনে আরও বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ অহংকারীদের ভালোবাসেন না।’ —সূরা আন নহল। অহংকারীদের পরিণাম সম্পর্কে হাদিসে সতর্ক করা হয়েছে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘এক লোক দম্ভভরে চলাফেরা করত। আল্লাহ তাকে জমিনে ধসিয়ে ফেলেন। সে মহা হিসাব দিবস পর্যন্ত মাটির অতলে দাবতেই থাকবে।’ —বোখারি।

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, ‘অত্যাচারী ও দাম্ভিক-অহংকারী স্বৈরাচারীদেরকে হাশরের দিন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পিঁপড়ার আকৃতিতে একত্র করা হবে। লোকেরা তাদেরকে পা দিয়ে পাড়াবে এবং চারদিক থেকে তাদের প্রতি শুধু লাঞ্ছনা ও অপমান বর্ষিত হতে থাকবে।’ —নাসায়ী ও তিরমিযী।

সর্বপ্রথম যে পাপের মাধ্যমে আল্লাহর আদেশের অবাধ্যতা প্রকাশ করা হয় তা হচ্ছে অহংকার। আল্লাহপাক ঘোষণা করেন : ‘আমি যখন ফেরেশতাদের বললাম : হজরত আদম (আ.)-কে সেজদা কর, তখন ইবলিশ ছাড়া সবাই সিজদা করল, সে নির্দেশ পালনে অস্বীকার করল এবং অহংকার করল। ফলে সে কাফেরদের অন্তর্ভুক্ত হলো’— সূরা বাকারা। এ থেকে বুঝা যায় যে, অহংকারবশত যে আল্লাহর হুকুম অমান্য করে, আল্লাহর ওপর তার বিশ্বাস থাকলেও তাতে কোনো ফায়দা হবে না। যেমন অহংকারের কারণে ইবলিশের ইমান ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছিল। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যার অন্তরে রেণু পরিমাণ অহংকার আছে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ —মুসলিম। আল্লাহ আমাদের অহংকার থেকে দূরে থাকার তওফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামী গবেষক

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর