বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

ডিএনসিসি মার্কেটের অগ্নিকাণ্ড

অগ্নি প্রতিরোধে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রতিবছরই শত শত কোটি টাকার সম্পদ  গ্রাস করছে। কেড়ে নিচ্ছে মানুষের জীবন। এ বিষয়ে জনসচেতনার ঘাটতি থাকায় গড়ে উঠছে না অগ্নি রোধের প্রস্তুতি। এড়ানো যাচ্ছে না বিপর্যয়। গত সোমবার মধ্য রাতের আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেল গুলশান-১ এর ডিএনসিসি মার্কেট। প্রায় আড়াইশ দোকানের মালামাল পুড়ে ভস্মীভূত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ ৫০ কোটি টাকারও বেশি। ডিএনসিসি মার্কেটে আগুন লাগার ঘটনায় ধারে-কাছের রাস্তাগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত মঙ্গলবার রাজধানীজুড়ে ভয়াবহ যানজটে লাখ লাখ মানুষকে ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়েছে। গুলশানের ডিএনসিসি মার্কেটটি ছিল নামিদামি পণ্যের অভিজাত বাজার। নয় বছর আগেই রাজউক এ ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। তারপরও সেখানে মার্কেট চালু রয়েছে। মার্কেটে দাহ্য পণ্যের দোকান থাকলেও আগুন নেভানোর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না। রাতে যখন আগুন লাগে তখন আগুন নেভানোর চেষ্টা তাত্ক্ষণিকভাবে করা সম্ভব হয়নি। ফলে সোমবার মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত আগুন নেভাতে প্রাণান্তকর চেষ্টা চালাতে হয় দমকল বাহিনীর ২২টি ইউনিটকে। গুলশান-১ এর ডিএনসিসি মার্কেটে কীভাবে আগুন লাগল তা এখনো উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। সাধারণভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের গোলযোগে আগুন লেগেছে। তবে ব্যবসায়ীরা করেছেন নাশকতার অভিযোগ। স্মর্তব্য, ঝুঁকিপূর্ণ এ মার্কেটটি ভেঙে বহুতল বিশিষ্ট নতুন মার্কেট তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল ২০০৩ সালে ঢাকা সিটির তৎকালীন মেয়র সাদেক হোসেন খোকার সময়ে। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের বিরোধও শুরু হয়। যা নিয়ে মামলাও চলছে। যে কারণে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীর মধ্যে। রাজধানীর এ গুরুত্বপূর্ণ বিপণি কেন্দ্রটিতে কীভাবে আগুন লাগল তা যথাযথ তদন্তে জানা যেতে পারে। অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনা এ ধরনের দুর্যোগ প্রতিরোধে আমরা কতটা অপ্রস্তুত সে সত্যটি তুলে ধরেছে। গুলশানের মতো অভিজাত এলাকার নামিদামি পণ্যের বিপণি কেন্দ্রে অগ্নি প্রতিরোধের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকা সত্যিকার অর্থেই দুর্ভাগ্যজনক। এ অগ্নিকাণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের শুধু নয়, লাখ লাখ নগরবাসীর জন্য দুর্ভোগের কারণ সৃষ্টি করেছিল। এ ধরনের বিপর্যয় রোধে সরকারকে অবশ্যই নজর দিতে হবে।

অগ্নি প্রতিরোধের প্রস্তুতি গড়ে তুলতে উদ্যোগ নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর