বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
ইতিহাস

তুঘলক বংশের পতন

ফিরোজ তুঘলকের মৃত্যুর পর দিল্লির সিংহাসন নিয়ে তার পুত্র ও পৌত্রদের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। অবশেষে তার পৌত্র তুঘলক শাহ ‘দ্বিতীয় গিয়াসউদ্দীন তুঘলক’ উপাধি ধারণ করে সিংহাসনে আরোহণ করেন। দ্বিতীয় গিয়াসউদ্দীন ছিলেন ফাত্তাহ খানের পুত্র। তিনি ছিলেন দুর্বল ও অকর্মণ্য শাসক। তিনি সিংহাসনে আরোহণ করে আমোদ-প্রমোদে গা ভাসিয়ে দেন এবং শাসনকার্যে অবহেলা প্রদর্শন করেন। অল্পদিনের মধ্যে তিনি তার পিতৃব্য-পুত্র আবু বকর কর্তৃক নিহত হন। অতঃপর আবু বকর দিল্লির কর্তৃত্ব গ্রহণ করে তার প্রভাব বৃদ্ধি করতে থাকেন। সামানার আমিরকে সুলতান ফিরোজ শাহের কনিষ্ঠ পুত্র যুবরাজ মুহম্মদের বিরুদ্ধে পাঠানো হয়। কিন্তু সামানার আমিরের মৃত্যুর সংবাদে রাজ্যের শান্তি বিঘ্নিত হয়। যুবরাজ মুহম্মদ এ সুযোগ গ্রহণ করে সামানার দিকে অগ্রসর হন এবং নিজেকে ‘সম্রাট’ বলে ঘোষণা করেন। কিছুসংখ্যক আমির ও অভিজাতদের কাছ থেকে সাহায্যের আশ্বাস পেয়ে তিনি দিল্লি অভিমুখে যাত্রা করেন এবং দিল্লির উপকণ্ঠে উপস্থিত হয়ে শিবির স্থাপন করেন। মেওয়াটের বাহাদুর নাহির আবু বকরের পক্ষ অবলম্বন করেন এবং তার সাহায্যে দিল্লির সেনাবাহিনী ফিরোজাবাদের যুদ্ধে যুবরাজ মুহম্মদকে পরাস্ত করে। পরাজিত হয়ে মুহম্মদ দোয়াবে চলে যান এবং দিল্লির সিংহাসন অধিকার করার ব্যর্থ চেষ্টা চালান। কিন্তু এতে তিনি নিরাশ হলেন। এ ঘটনার কিছুদিন পর আবু বকর আমির-ওমরাহদের ষড়যন্ত্রে সিংহাসনচ্যুত হন এবং যুবরাজ মুহম্মদ ‘নাসিরউদ্দীন মুহম্মদ’ নাম ধারণ করে সিংহাসনে আরোহণ করেন। কিন্তু নাসিরউদ্দীন বেশি দিন রাজত্ব করার অবকাশ পেলেন না। তার মৃত্যুর পর (১৩৯৪ খ্রি.) তার পুত্র হুমায়ুন সিংহাসনারোহণ করেন। তিনি কয়েক মাসের মধ্যেই মৃত্যুমুখে পতিত হন। অতঃপর শূন্য সিংহাসনে মুহম্মদের সর্বকনিষ্ঠ পুত্র মাহমুদ উপবিষ্ট হন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর