শনিবার, ৭ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

অপ্রতিরোধ্য ইয়াবা

রাজনৈতিক কানেকশন ঠেকাতে হবে

ইয়াবা নামের মাদক ঠেকাতে প্রশাসন যে চূড়ান্তভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে এটি এখন এক মূর্তমান সত্যি। সীমান্ত ডিঙিয়ে ইয়াবার চালান আসা বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না, ভূত তাড়ানোর জন্য যে সরিষা ব্যবহার করা হচ্ছে তার মধ্যে ভূতের অবস্থান থাকায়। সোজা কথায় মাদক পাচারকারীদের সঙ্গে সম্মানিত জনপ্রতিনিধি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অসৎ সদস্যদের যোগসাজশের কারণে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের শীর্ষ প্রতিবেদনে ইয়াবা আগ্রাসনের সর্বশেষ যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে তা আতঙ্কিত হওয়ার মতো। এতে বলা হয়েছে, ইয়াবা চোরাচালান তো বন্ধ হয়ইনি, উল্টো এখন রাজধানীতেই তৈরি হচ্ছে ইয়াবা। কয়েক ডজন ইয়াবা কারখানার সন্ধানও পেয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। কারখানাগুলো থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ইয়াবা তৈরির কমপ্রেসার, মোটর, মিশ্রণের যন্ত্র, স্প্রে মেশিন, কাঁচামাল সোডিয়াম বেনজোয়েট, ক্যাফেইন, ভেনিলা পাউডার, কেমিক্যালসসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম। ঢাকায় আলোচিত ইয়াবা সিন্ডিকেটের সদস্যরা মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আমদানি করেই ব্যবসা চালাতেন। গত বছর অক্টোবর থেকে সংঘবদ্ধ এ চক্রটি খোদ রাজধানী ঢাকাতেই ইয়াবার কারখানা স্থাপন শুরু করে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত লাখ লাখ ইয়াবা প্রতিদিন দেশের বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মুসলিম নির্যাতনের কারণে রোহিঙ্গারা দলে দলে নাফ নদ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছেন। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রোধে বাংলাদেশের টেকনাফ সীমান্তে বিজিবির নজরদারিও বেড়েছে। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রোধে কঠোর অবস্থানের কারণে টেকনাফ সীমান্ত হয়ে ইয়াবার অনুপ্রবেশ হ্রাস পেয়েছে। মাদক ব্যবসায়ীরা এ সুযোগে রাজধানীতেই গড়ে তুলেছেন ইয়াবার কারখানা। ইয়াবা আগ্রাসন বন্ধে মাদকবিরোধী লড়াই জোরদারের তাগিদ সৃষ্টি করেছে রাজধানীতেও মাদক তৈরির ঘটনায়। আমাদের মতে, ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর আঘাত হানতে সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইনের মতো কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। যেসব প্রভাবশালীর ছত্রচ্ছায়ায় মাদক ব্যবসা চলছে তাদের নিরস্ত করতেও নিতে হবে উদ্যোগ। দেশের রাজনীতির ইয়াবা কানেকশন বন্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে সবার আগে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর