মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

পাঠ্যবই সরবরাহে অনিয়ম

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়ার কর্মসূচি জনমনে প্রশংসা পেয়েছে। এ বছরও বই উৎসবের মাধ্যমে শিশুদের হাতে পাঠ্যবই তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু ভারতে ছাপা ৪৭ লাখ বই সময়মতো সরবরাহ না করায় বিপুলসংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেও সব বই পৌঁছায়নি। সময়মতো বই সরবরাহ না করার অভিযোগ উঠেছে ৭২টি দেশি ছাপাখানার বিরুদ্ধে এবং তাদের বিল আটকে দিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। নিম্নমানের কাগজ সরবরাহের অভিযোগে চারটি কাগজকলের বিরুদ্ধেও নেওয়া হয়েছে একই ধরনের পদক্ষেপ। সহযোগী দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের শীর্ষাসাই বিজনেস নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশের ৪৭ লাখ পাঠ্যবই ছাপার কাজ দেওয়া হয়। দরপত্র অনুযায়ী ডিসেম্বরের মধ্যেই এসব বই পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের কাছে সরবরাহ করার কথা। কিন্তু তা সময়মতো না পাওয়ায় নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও চট্টগ্রামের অনেক এলাকায় শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই তুলে দেওয়া সম্ভব হয়নি। ভারতে ছাপা বই সময়মতো না পাওয়ায় কর্তৃপক্ষ ৩৮ জেলার আপৎকালীন মজুদ থেকে নিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার শিক্ষার্থীদের হাতে কিছু বই তুলে দেয়। এজন্য ট্রাক ভাড়া বাবদ ৭ লাখ টাকা গচ্চা দিতে হয়েছে পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে। স্মর্তব্য, চলতি বছরের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বিতরণের জন্য ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার ২৪৫টি বই ছাপার কথা। এর মধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ের বই ছাপার কাজ এককভাবে দেশি প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া হয়। প্রাথমিক পর্যায়ের ১১ কোটি ৫৫ লাখ ২৬ হাজার ৯৫২টি বই প্রতি বছরের মতো এবারও ছাপানো হয় আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে। এ বছর দেশি ছাপাখানার পাশাপাশি ভারত ও চীনা প্রতিষ্ঠানও ছাপার কাজ পেয়েছে। পাঠ্যবই ছাপার ক্ষেত্রে নিম্নমানের কাগজ সরবরাহ এবং সময়মতো বই না ছাপানো নিঃসন্দেহে একটি বড় অনিয়ম। এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের জবাবদিহিতার ব্যবস্থা নিতে হবে। শিক্ষার্থীদের হাতে সময়মতো বই পৌঁছে দেওয়ার স্বার্থে দেশেই যাতে সব পাঠ্যবই ছাপা সম্ভব হয় সে উদ্যোগও নেওয়া উচিত। প্রাথমিক স্তরের বইয়ের অর্থ জোগানদাতা ইউনেসকোর সঙ্গে এ ব্যাপারে দেনদরবারের কথা ভাবতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর