শিরোনাম
বুধবার, ১১ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

উচ্চ শিক্ষিত বেকারত্ব

শিক্ষাব্যবস্থার অসঙ্গতি দূর করতে হবে

দেশে উচ্চ শিক্ষিত বেকার সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে ও তা সমাজে অস্থিরতার আশঙ্কা সৃষ্টি করছে। সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট রিসার্চের (সিডার) কর্মসংস্থান ও শ্রমবাজার পর্যালোচনা-২০১৭ শীর্ষক প্রতিবেদনে উচ্চ শিক্ষিত বেকারদের সংখ্যা বৃদ্ধির যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে তা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। প্রতিবেদনে তুলে ধরা আরও একটি তথ্য অশনি সংকেত বলে বিবেচিত হওয়ার মতো। এ তথ্যটি হলো দেশের ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী প্রায় ২৫ শতাংশ তরুণই নিষ্ক্রিয়। যারা কর্ম বাজারে নেই, শিক্ষায়ও নেই, প্রশিক্ষণেও নেই। প্রতিবেদনে উল্লিখিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী এ ধরনের নিষ্ক্রিয় তরুণদের সংখ্যা ২০১০ সালের তুলনায় ২০১৩ সালে কমলেও এর পরিমাণ ২৫ শতাংশ এবং তা দেশের জন্য একটি উদ্বেগজনক বিষয়। তরুণদের কর্মশক্তিই একটি দেশকে এগিয়ে নেয়। জনসংখ্যার ২৫ ভাগ তরুণ নিষ্ক্রিয় থাকা শুধু অর্থনীতির জন্যই হতাশাজনক নয়, সামাজিক ক্ষেত্রেও তার ক্ষতিকর প্রভাব অনস্বীকার্য। দেশে আজ ইভ টিজিং, ধর্ষণ ও মাদকাসক্ত, জঙ্গিবাদ ইত্যাদি যেসব সামাজিক সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে তার এক বড় অংশে যে নিষ্ক্রিয় তরুণদের একাংশের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তা সহজেই অনুমেয়। বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষিত তরুণদের এক বড় অংশ বেকারত্বের অভিশাপে ভুগলেও দেশের শিল্প-কলকারখানায় যোগ্য লোকের অভাবও প্রকট। চাহিদা অনুযায়ী প্রশিক্ষিত কর্মী সৃষ্টিতে দেশের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা অনেকাংশেই ব্যর্থ হচ্ছে। যে কারণে দেশে কয়েক লাখ বিদেশি কাজ করছে তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন শিল্পে। তারা প্রতিবছর এ দেশ থেকে শত শত কোটি টাকা নিজ দেশে পাঠাচ্ছে। দেশের শিক্ষা খাতের এই ব্যর্থতার অবসানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদও দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে কৃষি ও শিল্প খাতের শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরি হ্রাস পাওয়ার তথ্যও সমানভাবে উদ্বেগজনক। মজুরি বৃদ্ধির চেয়ে মূল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রমজীবীরা শুভঙ্করের ফাঁকিতে পড়ছে। সম্প্রতি গার্মেন্ট শিল্পে অসন্তোষ দানা বেঁধে ওঠার পেছনেও শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরি হ্রাস পাওয়ার ঘটনা ইন্ধন জুগিয়েছে। সিডারের প্রতিবেদনে উচ্চ শিক্ষিতদের বেকারত্ব বৃদ্ধি, দেশের অন্তত ২৫ শতাংশ তরুণের নিষ্ক্রিয় থাকা এবং শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরি হ্রাস পাওয়ার যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে তা একটি অশনি সংকেত।  এর মোকাবিলায় করণীয় কর্তব্য নির্ধারণে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সক্রিয় হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর