রবিবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

আখেরি মোনাজাত চাই জীবনের পরিবর্তন

মুফতি মুহাম্মদ আল আমিন

অন্যান্য বছরের মতো এবারও প্রায় শেষ হতে চলেছে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। ১৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম এই ইসলামী মহাসম্মেলন শেষ হবে আজ রবিবার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে। দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে ২০ জানুুয়ারি থেকে। তাবলীগের বিশ্ব মুরব্বিরা আখেরি মোনাজাতকে খুব একটা গুরুত্ব দেন না। তাই ঠিক কয়টায় মোনাজাত আরম্ভ হবে তা আগে থেকে ঘোষণা দেন না। তিন দিন ধরে মাঠে অবস্থান করা মুসল্লিদের মধ্য হতে যারা নগদ আল্লাহর রাস্তায় বের হয়ে যাবে তাদের উদ্দেশে হেদায়েত ও দিকনির্দেশনামূলক বয়ান শেষ হওয়ার পর সাধারণত আখেরি মোনাজাত শুরু হয়। হেদায়েতের বয়ান শুরু হয় সকাল ৯টার দিকে। আনুমানিক তিন ঘণ্টা হেদায়েতের বয়ান হয়। এই বয়ানে আল্লাহর রাস্তায় নগদ চল্লিশ দিন, চার মাস ও এক বছরের জন্য বেরিয়ে যাওয়া দেশি-বিদেশি মুসলমানদের খুব ভালোভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হয় তাদের দায়-দায়িত্ব। কখন কোন কাজ কীভাবে করবে, কীভাবে আল্লাহর দিকে মানুষকে ডাকবে, মসজিদে কী কী  কাজ করবে সব বিষয়ে সুন্দরভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়। মসজিদের বাইরে যখন যাবে তখন কাকে কীভাবে দীনের কথা বলবে, ইসলামের প্রতি জনসাধারণকে কীভাবে আহ্বান করবে তাও ভালোভাবে উপস্থাপন করা হয়।  আখেরি মোনাজাত নিয়ে আমাদের দেশের সর্বস্তরের মুসলমানের মধ্যে এক ধরনের উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যায়। মোনাজাতে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও থানা থেকে আগের রাত থেকে লাখ লাখ মুসলমান তুরাগ তীরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর মানুষ যে করেই হোক মোনাজাতে শরিক হয়। সবাই ভাবে, তিন দিন ধরে চলা ইজতেমায় প্রতি নামাজের পর বয়ান না শুনলেও আখেরি মোনাজাতে উপস্থিত হতে হবে। আমল যাই করি না কেন মোনাজাতে অংশ নিলেই সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। এই লোকগুলোর জীবন পরিবর্তনের দিকে কোনো নজর নেই। মিথ্যা বলা, সুদ-ঘুুষ খাওয়া, মানুষকে ঠকানো, অন্যের হক নষ্ট করা ইত্যাদি সব অপকর্ম থেকে বিরত থাকার আন্তরিক ইচ্ছা নেই। আল্লাহর হুকুম মানা ও প্রিয় নবীর সুন্নত পালন করার প্রতি আগ্রহ নেই। আগ্রহ আছে আখেরি মোনাজাতে শামিল হওয়ার। লাখ লাখ মানুষের জনসমুদ্রে নিজেও দুুই হাত আল্লাহর দরবারে তুলে দোয়া করার। প্রিয় পাঠক, ইসলামে আবেগের স্থান নেই। ইসলাম চায় মানুষের জীবনের পরিবর্তন। ব্যক্তিজীবনে ফরজ হুকুমগুলো প্রতিষ্ঠিত হোক। রসুলের সুন্নতে জীবন সজ্জিত হোক। সমাজ হতে পাপাচার, অনাচার দূরীভূত হোক। সৎ ও সত্য পথে সবাই চলুক। সবাই অন্যায় কাজ পরিহার করুক। মহান আল্লাহ যেন আমাদের তৌফিক দান করেন।  আমিন!   

লেখক : খতিব, সমিতি বাজার মসজিদ, নাখালপাড়া, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর