সোমবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

জঙ্গি অর্থায়ন বন্ধ হোক

আর্থিক খাতে আরও সংস্কার কাম্য

জঙ্গিবাদের অর্থ জোগান রোধে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা ব্যাংক খাতে পরিকল্পিত সংস্কারের তাগিদ দিয়েছেন। তারা বলেছেন, কসমেটিক সার্জারির মাধ্যমে আর্থিক খাতের জঙ্গি অর্থায়ন রোধ করা সম্ভব হবে না। কিন্ডারগার্টেন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়, এনজিও, সেবা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক, ইন্স্যুরেন্সসহ অন্যান্য সেক্টরে উগ্রবাদীরা যে অর্থচক্র গড়ে তুলেছে তা রোধে পরিকল্পিত সংস্কারের পথে যেতে হবে। গত শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘জঙ্গিবাদ ও ব্যাংকিং খাতের সংস্কার’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে শিক্ষাবিদ, রাজনীতিক, কূটনীতিক, সাংবাদিক, আইনজীবী এবং নিরাপত্তা বিশ্লেষকসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের বিশিষ্টজনরা জঙ্গিবাদের অর্থ জোগান বন্ধে যে মতামত রেখেছেন তা তাত্পর্যের দাবিদার। জঙ্গিবাদ দমনে এ ভয়ঙ্কর দৈত্যদের লালন পালনে ব্যবহূত অর্থের জোগান বন্ধের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জঙ্গিবাদের উত্থানে একটি উগ্রবাদী ধর্মাশ্রয়ী রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতা দিবালোকের মতোই স্পষ্ট। নানা নামে গড়ে ওঠা জঙ্গি দলগুলোর সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী ওই দলটির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের উত্থান মেনে নিতে না পারা এ দলটি মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদারদের চেয়েও বহুক্ষেত্রে নৃশংস ভূমিকা পালন করেছে। স্বাধীনতার পর তারা নানা চেহারায় আবির্ভূত হয়ে অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর তারা স্বরূপে আবির্ভূত হয় এমনকি ক্ষমতার অংশীদার হয়ে বাংলাদেশের অস্তিত্ববিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ার ধৃষ্টতা দেখায়। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে বিষধর সাপের কোমর ভাঙা সম্ভব হলেও তাদের বিষদাঁত এখনো ভাঙেনি। বিষদাঁত ভাঙা নিশ্চিত করতে নিরবচ্ছিন্ন জঙ্গিবিরোধী অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি জঙ্গি খাতের অর্থায়ন শতভাগ বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকার সাহসী ও সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে জঙ্গি অর্থায়নে সংশ্লিষ্ট একটি শীর্ষ ব্যাংকে সংস্কার চালিয়েছে। তবে আধাআধি কিংবা কসমেটিক সার্জারিতে সন্তুষ্ট না থেকে এ ক্ষেত্রে সরকারকে আরও এগোতে হবে। শুধু ব্যাংক নয় উগ্রবাদীদের অর্থ জোগানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানেও সংস্কারের পদক্ষেপ নিতে হবে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর