মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

নারায়ণগঞ্জের ৭ খুন মামলা

আদালতের রায় দৃষ্টান্তমূলক

নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত ৭ খুন মামলায় সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেনসহ ২৬ আসামির ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। বাকি ৯ আসামির ৭ জনকে ১০ বছর, একজনকে ৭ বছর ও অন্য একজনকে ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে র‌্যাব-১১-এর সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মুহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন (অব.) ও লে. কমান্ডার মাসুদ রানা  (অব.)ও রয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ ৭ জনকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল অপহরণ করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর ৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয় শীতলক্ষ্যা নদী থেকে। পরদিন একই স্থান থেকে আরেকজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর দুটি মামলা হয়। এর একটির বাদী ছিলেন প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি। আরেকটি মামলার বাদী হন নিহত আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল। মামলা দুটির তদন্ত শেষে ৩৫ জন অভিন্ন আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়; যার মধ্যে ২৩ জন গ্রেফতার হলেও পলাতক রয়েছেন ৭ জন। দেশের ইতিহাসের অন্যতম নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাদানের ঘটনা বিচারব্যবস্থার ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জনে অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা প্রভাবশালী বলে বিবেচিত হওয়া সত্ত্বেও নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালত দৃষ্টান্তমূলক সাজা দিয়ে প্রমাণ রেখেছে আইনের হাত অনেক বেশি প্রসারিত। হত্যাকাণ্ডে একজন জনপ্রতিনিধির জড়িত থাকার ঘটনা ছিল নিঃসন্দেহে একটি লজ্জাজনক উদাহরণ। এলিট ফোর্স হিসেবে পরিচিত ও নন্দিত র‌্যাব-১১-এর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতাও এই সুপরিশিক্ষিত বাহিনীর জন্য কলঙ্কস্বরূপ। হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও বিচারে অবশ্য আসামিদের সামাজিক প্রভাব কোনোভাবেই প্রাধান্য পায়নি। আদালত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিদান করে দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে যে অবদান রেখেছে তা প্রশংসাযোগ্য। বিষাদময় নারায়ণগঞ্জ হত্যাকাণ্ডে যারা নিহত হয়েছেন তাদের স্বজনরা কোনোভাবেই তাদের ফিরে পাবেন না। তবে অপরাধীদের শাস্তিদান তাদের জন্য সান্ত্বনা বলে বিবেচিত হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর