মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

মানুষকে সুপথে আহ্বান সব নবী ও রসুলের সুন্নাত

মুহম্মাদ আবদুর রশীদ

আল্লাহর দীনের প্রতি মানুষকে আহ্বান করার উদ্দেশ্যে নবী-রসুলদের আগমন ঘটেছে। হজরত আদম (আ.) থেকে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত অগণিত নবী-রসুল এ দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের পর এ দায়িত্ব পালন করেছেন খোলাফায়ে রাশেদিন, সাহেবায়ে কিরাম, তাবেইন, তাবেতাবেইন, সলফে সালেহিন এবং আলেম-ওলামা ও পীর-মাশায়েখরা। পৃথিবীতে যত নবী-রসুল আগমন করেছেন তারা সবাই আল্লাহর পথে মানুষকে আহ্বান করেছেন। আল্লাহর পথের পথিক হয়ে তারা নিঃস্বার্থভাবে মানুষকে কল্যাণের দিকে ডেকেছেন। তাঁরা  ইসলামের এ মৌলিক কাজ করতে গিয়ে কোনো ধরনের বিনিময় গ্রহণ করেননি। ইসলাম শিখতে কেউ তাদের কাছে আসবে, এই অপেক্ষায় না থেকে তারা মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে সত্যের পথে নিরলসভাবে দাওয়াত দিয়েছেন। নবী-রসুলদের এই মহান দায়িত্ব শেষ নবীর উম্মত হিসেবে আমাদের ওপর অর্পিত হয়েছে। তাবলিগ জামাত এ দায়িত্ব পালনকে তাদের কর্তব্য বলে বেছে নিয়েছে। তাবলিগ জামাতের অসিলায় নবীদের এ বরকতময় কাজ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে। পৃথিবীর প্রত্যেক দেশে একই নিয়মে চলছে আল্লাহর পথে মানুষকে আহ্বানের  আমল। সপ্তাহে যে কোনো একদিন ফরজ নামাজের পর নিজ এলাকার মসজিদে এবং অন্য একদিন পাশের এলাকার মসজিদে মানুষকে দীনের পথে আহ্বানের জন্য জড়ো হন তাবলিগ জামাতের সদস্যরা। যেখান থেকে সাধারণ মানুষের কাছে দীনি দাওয়াত পৌঁছে দেওয়া হয়। মানুষ যাতে নামাজ পড়ে, সৎ পথে চলে সে ব্যাপারে তাদের উদ্বুদ্ধ করা হয়। এর প্রভাবে যারা নামাজ পড়তেন না তারা মসজিদে আসা শুরু করেন। আশপাশের এলাকায়ও দীনি পরিবেশ কায়েম হতে শুরু করে। তাবলিগ জামাতের এই দাওয়াতি কার্যক্রম বর্তমান যুগের জন্য খুবই ফলপ্রসূ একটি আমল। সারা পৃথিবীর লাখ লাখ মানুষকে খারাপ পথ থেকে ভালো পথে আনতে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ইমানি স্পৃহা সৃষ্টি করতে দাওয়াতি কার্যক্রমের ভূমিকা অপরিহার্য। মানুষের  অন্তর  পরিবর্তন এবং ইসলামের বাণী জনগণের হৃদয়ে পৌঁছে দিতে এটি কার্যকর ব্যবস্থা বলে বিবেচিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে নিজ মহল্লা ও অন্য মহল্লায় জনসাধারণের মাঝে দীনি দাওয়াত ব্যাপকভাবে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। দাওয়াতি কার্যক্রমের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ কোরআন-হাদিস তথা ইসলাম সম্পর্কে শিক্ষা লাভ করছে। মসজিদে আসতে উদ্বুদ্ধ করা এবং আল্লাহর হুকুমমতো চলা ও নবীর তরিকা অনুযায়ী আমল করার যে দাওয়াত পৌঁছে দেওয়া হয় সবার কানে কানে, তা সমাজে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক সৃষ্টিতেও অবদান রাখছে। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে দাওয়াতি কার্যক্রমে শামিল হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমিন।

     লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর