মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
মতামত

ওদের বিষদাঁত ভাঙতে হবে

প্রথমবারের মতো নব্য জেএমবির এক শীর্ষ জঙ্গি রাজীব গান্ধীকে শনিবার আটক করা সম্ভব হয়েছে। এর আগের দিন বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন নব্য জেএমবির আরও দুই নেতৃস্থানীয় জঙ্গি মারজান ও সাদ্দাম। কাউন্টার টেররিজম পুলিশের ভাষ্যমতে, এ দুই ভয়ঙ্কর জঙ্গি বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে রায়েরবাজারে এক বন্দুকযুদ্ধে প্রাণ হারান। এ নিয়ে গুলশান জঙ্গি হামলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ১৭ জঙ্গির ১৩ জনই নিহত ও একজন আটক হলেন। উগ্রবাদের উপাসকদের ভ্রান্ত মতাদর্শ দেশ ও জাতির জন্যই শুধু নয়, নিজেদের জন্যও যে অকল্যাণের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে জীবনের এই অপচয় তারই প্রমাণ। নিহত দুই জঙ্গির মধ্যে মারজান গুলশান হামলার অন্যতম হোতা হিসেবে চিহ্নিত। সাদ্দাম ছিলেন রংপুরে নিহত জাপানি নাগরিক হোশি কোনিওসহ অনেক হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড। মারজানের বাবা পুত্রের নিহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, তার সন্তান উপযুক্ত শাস্তিই পেয়েছে, এজন্য তার আফসোস নেই। সন্তানের বিপথগামিতা বাবা-মায়েদের জন্যও যে বিড়ম্বনা হয়ে দেখা দেয়, সে সত্যই যেন উঠে এসেছে একজন হতভাগা বাবার প্রতিক্রিয়ায়। মারজান ও সাদ্দাম নিহত এবং রাজীব গান্ধীর গ্রেফতার হওয়ার মাধ্যমে জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবিকে আরও কিছুটা কোণঠাসা করা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করা যেতে পারে।

পালিয়ে থাকা দুই জঙ্গি সেনাবাহিনীর বরখাস্ত মেজর জিয়া ও মুসাকেই এখন এ সংগঠনের ভরসা বলে মনে করা হচ্ছে এবং তাদের ধরার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তত্পরতা চালাচ্ছে। শীর্ষ জঙ্গিদের প্রায় সবাই নিহত অথবা আটক হওয়ায় এ সংগঠনের আঘাত হানার ক্ষমতা যে একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে, তাতে সন্দেহের অবকাশ নেই।

তবে দেশ ও জাতির জন্য বিপদ হিসেবে আবির্ভূত হওয়া এই বিষধর সাপের কোমর ভাঙার ঘটনায় আত্মতৃপ্তি লাভ করলে চলবে না। তাদের বিষদাঁত উপড়ে ফেলা পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালাতে হবে। পাশাপাশি যেসব কারণে জঙ্গিবাদের নোংরা ভূতের আবির্ভাব ঘটছে সে পথ বন্ধ করতে হবে। উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ তথা হত্যা-সন্ত্রাসের পথ যে ইসলামের নয়, সে বিষয়ে দেশের মানুষকে সচেতন করতে হবে। এ ব্যাপারে মসজিদ-মাদ্রাসাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান-সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসার বিষয়টিও গুরুত্বের দাবিদার।

আবীর খান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর