বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

কিছু পুলিশের প্রতিহিংসামূলক আচরণ

বিচার বিভাগীয় তদন্ত কাম্য

অপরাধের অভয়ারণ্য হিসেবে আশুলিয়ার যে পরিচিতি গড়ে উঠেছে তা অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুর্ভাগ্যজনক। এ পরিচিতির পেছনে পুলিশের কিছু সদস্যের অনাকাঙ্ক্ষিত ভূমিকাও ওপেন সিক্রেট। তাদের কারণেই আশুলিয়া চাঁদাবাজদের মৃগয়ায় পরিণত হয়েছে। রাত নামার সঙ্গে সঙ্গে সড়ক-মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে জড়ো হয় চাঁদাবাজরা। বাংলাদেশ প্রতিদিনের ‘রাত নামলেই চাঁদাবাজির বিভীষিকা’ শীর্ষক প্রতিবেদনে আশুলিয়ায় বেপরোয়া চাঁদাবাজির যে খণ্ডচিত্র তুলে ধরা হয়েছে তা পুলিশের সুনামের জন্য সুখকর নয়। আইন প্রয়োগকারী একটি সুশৃঙ্খল বাহিনীর সুনামকে জিম্মি করে পুলিশের কিছু দুর্বিনীত সদস্যের ছত্রচ্ছায়ায় সেখানে দীর্ঘদিন ধরে যে অবাধ চাঁদাবাজি চলে আসছে তা অবিশ্বাস্য হলেও সত্য। সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে আশুলিয়ার ১০টি পয়েন্টে প্রতি রাতে গড়ে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার চাঁদাবাজির যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে তা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। অপরাধীদের দমনের বদলে পুলিশের কোনো কোনো সদস্য যেভাবে নিজেরাই অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন তা এই বাহিনীর সত্ ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের জন্য খুবই অস্বস্তিকর। কিছু দুর্নীতিপরায়ণ পুলিশের অন্যায় আবদারে সায় না দিয়ে এই প্রতিবেদন পাঠানোয় বাংলাদেশ প্রতিদিনের আশুলিয়া প্রতিনিধি নাজমুল হুদাকে কল্পিত অভিযোগে শুধু গ্রেফতারই নয়, রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনও করা হয়েছে। নাজমুলের বিরুদ্ধে প্যান্ট চুরির হাস্যকর অভিযোগ সাজিয়ে আবারও রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হয়েছে। সাংবাদিক নাজমুলের দোষ, তিনি সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের বারণ না মেনে বাংলাদেশ প্রতিদিন ও একুশে টেলিভিশনে গার্মেন্ট শ্রমিকদের আন্দোলন সম্পর্কে প্রতিবেদন পাঠিয়েছিলেন। চাঁদাবাজির প্রতিবেদন করেছিলেন। এজন্য তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা দায়েরের মাধ্যমে প্রতিহিংসামূলক আচরণের যে দৃষ্টান্ত আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্থাপন করলেন, তা পুলিশ ও গণমাধ্যমের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টির পথ প্রশস্ত করবে মাত্র। এটা কারোরই কাম্য হওয়া উচিত নয়। দু-একজনের অন্যায়ের দায়ভার গোটা পুলিশ বিভাগ নিতে পারে না। আমরা পুলিশবাহিনীকে জনগণের বন্ধুরূপেই দেখতে চাই। পুলিশের ভাবমূর্তি অটুট রাখার স্বার্থেই সাংবাদিক নাজমুলের ওপর আশুলিয়ার সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতিহিংসামূলক আচরণ, নির্যাতন ও হয়রানির বিচার বিভাগীয় তদন্ত কামনা করছি।

সর্বশেষ খবর