সোমবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

শেয়ারবাজারে অশনি সংকেত

অপনায়কদের নিরস্ত করুন

শেয়ারবাজারের অপনায়করা ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তাদের কারসাজিতে মরা ঘোড়া হিসেবে বিবেচিত জেড ক্যাটাগরির শেয়ারের দাম হঠাৎ করে বাড়তে শুরু করেছে। সে মরা ঘোড়াও ঊর্ধ্বপানে ছুটেছে স্পুটনিক বেগে। মনে হচ্ছে পুঁজিবাজার কেলেঙ্কারির দক্ষ খেলোয়াড়রা ১৯৯৬ ও ২০১০ সালের মতো মাঠে নেমেছে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের বোকা বানিয়ে আবারও তাদের টাকা লোপাট করতে। ১৯৯৬ ও ২০১০ সালের শেয়ার কেলেঙ্কারিতে সর্বস্ব হারিয়েছিল লাখ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী। তাদের কেউ বউয়ের কিংবা মায়ের গহনা বিক্রি করে বিনিয়োগ করেছিলেন শেয়ারবাজারে। কেউ জমি বিক্রি করে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে ভাগ্য পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। চাকরি জীবন শেষে পেনশনের পাওয়া সব অর্থ বিনিয়োগও করেছেন কেউ কেউ। লাখ লাখ বিনিয়োগকারীর অর্থ লোপাট করে কেলেঙ্কারির হোতারা কেটে পড়ে। শেষ অব্দি সব দোষ চাপে সরকারের ওপর। সরকার কেন শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির হোতাদের নিরস্ত করেনি এ অভিযোগ ওঠে জোরেশোরে। ১৯৯৬ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের ৫ বছরে দেশে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণাধীনে থাকা, ১০ টাকায় চালের কেজি বিক্রি হওয়াসহ চারদিকের ভূরি ভূরি সাফল্য থাকলেও সব কৃতিত্ব মাঠে মারা যায় শেয়ার কেলেঙ্কারির কারণে। ঘরে ঘরে সর্বস্ব হারানোর কান্না সরকারের জন্য সুখকর হয়নি। ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে বিপুল জনপ্রিয়তা নিয়ে। দেশের উন্নয়নেও চোখে পড়ার মতো অবদান রাখতে সমর্থ হয় তারা। সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপের কাছে কোণঠাসা হয়ে পড়ে বিরোধী দলের রাজনীতি। কিন্তু শেয়ার কেলেঙ্কারির অপনায়করা বিরোধী পক্ষের হাতে সরকারকে বিব্রত করার অস্ত্র তুলে দেয়। ২০১০ সালের শেয়ার কেলেঙ্কারিতে লাখ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী পথে বসলে ক্ষমতাসীন দলের পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যায়। গত তিন বছরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সরকারের পায়ের নিচে যখন মাটি জড়ো হচ্ছে তখন আবারও পুঁজিবাজারের খেলোয়াড়রা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। লাখ লাখ বিনিয়োগকারীর স্বার্থে নয়, নিজেদের অস্তিত্বের স্বার্থেই পুঁজিবাজারের অপকর্মের হোতাদের নিরস্ত করতে সরকারকে সময় থাকতেই এগিয়ে আসতে হবে। আরব্য উপন্যাসের থিপ অব বাগদাদের বশংবদদের রুখতে ব্যর্থ হলে তা আত্মঘাতী পরিণতিই ডেকে আনবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর