সোমবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের ঘটনা

চ্যান্সেলরের হস্তক্ষেপ কাম্য

ভাইস চ্যান্সেলর ও প্রো-ভাইস চ্যান্সেলরের দ্বন্দ্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি যেভাবে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে তা সংশ্লিষ্টদের জন্য না হলেও দেশবাসীর জন্য লজ্জাজনক। দেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসা বিদ্যাপীঠ ও সব চেয়ে মানসম্মত সরকারি হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তিকে তারা যেভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছেন তা কোনোভাবেই কাম্য নয়।  নার্স নিয়োগের দুর্নীতিকে কেন্দ্র করে এ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শীর্ষ কর্তাব্যক্তির দ্বন্দ্বে গত বৃহস্পতিবার প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর এ এম এস জাকারিয়া স্বপন লাঞ্ছিত হয়েছেন ভাইস চ্যান্সেলরের হাতে। চিকিৎসকরা দুই পক্ষের হয়ে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হওয়ায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা পড়েছেন বিপাকে। এ হাসপাতালের ২০০ নার্স নিয়োগের জন্য সম্প্রতি লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। তাতে বিস্ময়করভাবে টাঙ্গাইল জেলার ৭৬ জন প্রার্থী অস্বাভাবিক নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। তাদের গড় নম্বর শতকরা ৮০ থেকে ৯৩ ভাগ পর্যন্ত। এই ৭৬ জনের মধ্যে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলারই ২৩ জন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর টাঙ্গাইল জেলার কীর্তিসন্তান ও তিনি ঘাটাইল উপজেলার বাসিন্দা। নার্স নিয়োগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শীর্ষ কর্মকর্তার দ্বন্দ্বে তাদের সমর্থক চিকিৎসকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর এবং শিক্ষকদের একাংশ নার্স নিয়োগে দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে অভিযোগ তুললে তাদের সঙ্গে ভাইস চ্যান্সেলর ও তার ঘনিষ্ঠদের দ্বন্দ্ব বেধে যায়। গত বৃহস্পতিবার ভাইস চ্যান্সেলরের কার্যালয়ে বৈঠক ডাকেন উপাচার্য। এ বৈঠকে ভাইস চ্যান্সেলর, তিন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ও রেজিস্ট্রারের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও অতিরিক্ত অন্য কর্মকর্তাদের উপস্থিত দেখে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ডা. স্বপন প্রতিবাদ করেন। এ সময় ভাইস চ্যান্সেলর ও প্রক্টর দুলাল মিলে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলরকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করেন। দেশের ৪৪ বছরের ইতিহাসে সরকারি সব বিশ্ববিদ্যালয়ে হানাহানির অসংখ্য ঘটনা ঘটলেও কোনো ভাইস চ্যান্সেলরের হাতে কারোর প্রহৃত হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। এ ঘটনা দেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসা বিদ্যাপীঠের জন্য যে কলঙ্ক বয়ে এনেছে তা অমোছনীয় বলেই মনে করা যেতে পারে। এ বিষয়ে চ্যান্সেলরের হস্তক্ষেপও অনিবার্য হয়ে উঠেছে।

সর্বশেষ খবর