মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

মদ ও জুয়া থেকে দূরে থাকতে হবে

মুহম্মাদ আবদুর রশিদ

মদ ও জুয়া মানবসমাজকে জিম্মি করে ফেলছে। বিশ্বজুড়ে প্রতিনিয়ত হত্যা, ধর্ষণ, ডাকাতি, ছিনতাই ইত্যাদি যেসব অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে তার এক বড় অংশের সঙ্গে মাদকের সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের দেশে মাদকের জন্য এহেন অপরাধ নেই যা সংঘটিত হয় না। মাদকের অর্থ জোগাড় করার জন্য চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের ঘটনা অহরহ ঘটছে। এমনকি নারীরা মাদকের পাল্লায় পড়ে নিজের সম্ভ্রম বিক্রি করে মাদক সংগ্রহ করছে এমন উদাহরণ কম নয়। মাদক গ্রহণে বাধা দেওয়ায় বাবা-মাকে খুনের ঘটনাও ঘটছে। একইভাবে জুয়ার নেশায় সর্বস্ব হারানোর ঘটনাও অহরহ ঘটছে। জুয়া এমনই ভয়ঙ্কর নেশা যে আমাদের এই দেশেও কোনো কোনো জুয়াড়ি জুয়া খেলার সময় নিজ স্ত্রীকে মূলধন করেও জুয়ার চাল চেলেছে।

ইসলাম সব ধরনের মাদকদ্রব্য গ্রহণকে হারাম বা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। মদ, হাশিশ, হেরোইন, আফিম, চরস, ভাঙ, তাড়ি, ফেনসিডিল, ইয়াবা সব ধরনের মাদকদ্রব্যই সে বিবেচনায় হারাম। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘প্রতিটি নেশাকর দ্রব্যই অবৈধ’ (মুসলিম)।

মাদক সেবনকারীদের পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘মাদকাসক্ত ব্যক্তি, জাদুটোনায় বিশ্বাসী এবং রক্তের সম্পর্ক ছিন্নকারী ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।’ (আহমদ, হাকেম)

হজরত ইবনে ওমর (রা.) বলেছেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘সব মাদকদ্রব্য মদের পর্যায়ভুক্ত এবং সব মদই হারাম। পার্থিব জীবনে যে মদ পানে অভ্যস্ত ছিল এবং তওবা না করে মারা যায়, পরলোকে সে জান্নাতের পানীয় থেকে বঞ্চিত হবে। (বোখারি, মুসলিম, তিরমিজি, নাসায়ি, আবু দাউদ, তাবারানি ও রায়হাকি)

পবিত্র কোরআনের সূরা আল মায়েদায় ৯০-৯১ নম্বর আয়াতে মদ জুয়া প্রতিমা ও ভাগ্য গণনাকে শয়তানের কাজ বলে অভিহিত করে তা থেকে দূরে থাকার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। হাদিসে জুয়া খেলাকে ধিক্কার দিয়ে বলা হয়েছে যারা জুয়া খেলে তারা নিজেদের হাতকে শূকরের গোশত ও রক্তে রঞ্জিত করে।

মদ ও জুয়া মানুষকে কাণ্ডজ্ঞানহীন করে তোলে। মানুষকে ব্যক্তিত্বহীন হতে বাধ্য করে। মদ ও জুয়ার কারণে আর্থিকভাবে দেউলিয়ায় পরিণত হয়েছে আমাদের সমাজে এমন মানুষ অসংখ্য। ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের দ্বারা পরিচালিত হয়ে আমাদের সবারই উচিত মদ ও জুয়ার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। বিশেষত মাদকদ্রব্য গ্রহণ এবং এর বেচাকেনা রোধ করা গেলে দেশ ও সমাজকে অনেক অপরাধ থেকে রক্ষা করা যাবে। সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলাও নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। আল্লাহ আমাদের মদ ও জুয়া থেকে দূরে থাকতে তৌফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর