শনিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

সাংবাদিক নির্যাতন

ক্ষমতাদর্পীদের নিবৃত্ত করুন

পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা সাংবাদিকদের ওপর যেভাবে প্রতিহিংসা পরায়ণতায় ভুগছে, তা শুধু অকাম্যই নয়, দুর্ভাগ্যজনক। সন্দেহ নেই এই অপকর্মের সঙ্গে জড়িত পুলিশের একটি ক্ষুদ্র অংশ। যারা নিজেদের অনিয়ম ও দুর্নীতি ফাঁস করার দায়ে সংবাদ মাধ্যমকে প্রতিপক্ষ ভাবার অবিমৃষ্যকারিতায় ভুগছে। সরকারের দাবি তারা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা তথা মুক্ত সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী। কিন্তু পুলিশ সদস্যদের এক ক্ষুদ্র অংশের ক্ষমতার অপচর্চা সরকারের সদিচ্ছা সম্পর্কেই প্রশ্ন সৃষ্টি করছে। সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে সরকারের সুসম্পর্কে চিড় ধরাচ্ছে। কদিন আগে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাভার প্রতিনিধি নাজমুল হুদাকে রিমান্ডে নিয়ে পুলিশ যে প্রতিহিংসামূলক আচরণ করেছে তা শুধু বেআইনিই নয়—আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তির জন্যও ক্ষতিকর। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সারা দেশের সাংবাদিকদের মধ্যে যখন ক্ষোভ দানা বেঁধে উঠছে, তখন তা নিরসনের ব্যবস্থা না নিয়ে তারা যেভাবে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তা প্রকারান্তরে সাংবাদিকদের ক্ষোভকে আরও ঘনীভূত করতেই অবদান রাখছে। গত বৃহস্পতিবার তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির ডাকা হরতাল চলাকালে পুলিশের কতিপয় দুর্বিনীত সদস্য যেভাবে বিনা কারণে প্রতিহিংসা পরায়ণ মনোভাব দেখিয়ে এটিএন নিউজের দুই সাংবাদিককে মারধর করেছে তা যে কোনো বিবেচনায় নিন্দনীয়। হরতালে বিএনপিসহ সরকারবিরোধী বেশ কিছু দল সমর্থন জানালেও তা সফল হয়নি সংশ্লিষ্ট দলগুলোর কর্মীরা মাঠে না থাকার কারণে। কিন্তু ফ্লপ হরতালকে আলোচ্য বিষয়ে পরিণত করতে শাহবাগে পুলিশের কিছু সদস্য যেভাবে বিনা উসকানিতে একজন হরতাল সমর্থক কর্মীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তা কোনোভাবে কাম্য ছিল না। তাদের সে অসঙ্গত আচরণ ক্যামেরায় ধারণ করতে গিয়ে এটিএন নিউজের দুজন সাংবাদিক পুলিশের হাতে চরমভাবে নিগৃহীত হয়। গত বৃহস্পতিবারের আধা বেলা হরতাল গুরুত্ব হারালেও পুলিশি নির্যাতন দেশি-বিদেশি সংবাদ মাধ্যমের সংবাদে পরিণত হয়। আশার কথা, এ ঘটনায় শাহবাগ থানার এক ক্ষমতাদর্পী এএসআইকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আমরা এ পদক্ষেপকে পুলিশ কর্তৃপক্ষের ইতিবাচক ভূমিকা হিসেবে দেখতে চাই। আশা করতে চাই, পুলিশ বাহিনীর সুনামে চুনকালি লাগাতে যারা উঠেপড়ে লেগেছে, তাদের নিবৃত্ত করতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর