রবিবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

স্কুল পুড়িয়ে দেওয়ার ধৃষ্টতা

দুর্বৃত্তদের কঠোর সাজা নিশ্চিত করুন

গাইবান্ধায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আগুনে পুড়ে গেছে। কীভাবে ব্রহ্মপুত্র নদের কুন্দেরপাড়াচরের গণউন্নয়ন একাডেমি নামের বিদ্যালয়টি পুড়ে ছাই হলো তা যথাযথ তদন্তে জানা যেতে পারে। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, দুর্বৃত্তরা পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগিয়ে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষ, শিক্ষক মিলনায়তন ও লাইব্রেরিসহ ১০টি শ্রেণিকক্ষ পুড়িয়ে দিয়েছে। ভস্মীভূত হয়েছে এসএসসি ও জেএসসি পাস শিক্ষার্থীর সনদপত্রসহ সব আসবাবপত্র ও শিক্ষা সরঞ্জাম। শুক্রবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে বিদ্যালয়টিতে আগুন লাগে এবং ১২ ঘণ্টা পর দুপুর ১২টায়ও ধ্বংসস্তূপ থেকে আগুনের ধোঁয়া বের হচ্ছিল। দুর্বৃত্তদের প্রতি সন্দেহের কারণ স্থানীয় কিছু লোকজন দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ের কার্যক্রমে বাধা দিয়ে আসছিল। বিদ্যালয়ের পাশের এলাকায় যাত্রার নামে নগ্ন নাচ-গান এবং মদ-জুয়ার আসর বসায় গত বৃহস্পতিবার এসবের প্রতিবাদে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, এ কারণে দুর্বৃত্তরা প্রতিশোধ নিতে বিদ্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। গাইবান্ধার চরাঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে চরমপন্থি, জঙ্গি এবং দুর্বৃত্তদের অভয়ারণ্য হিসেবে বিরাজ করছে। একটি বেসরকারি সংস্থা পরিচালিত এ বিদ্যালয়টি এলাকায় একদিকে যেমন শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছিল, অন্যদিকে সামাজিক কুসংস্কার এবং সব অন্যায়ের প্রতিবাদ করে আসছিল। যে কারণে দুর্বৃত্তদের জিঘাংসার শিকারে পরিণত হয় প্রায় ছয়শ শিক্ষার্থীর এ বিদ্যালয়টি। সংবাদ মাধ্যমে ভস্মীভূত বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের কান্নায় ভেঙে পড়ার যে ছবি ছাপা হয়েছে তা হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ারই মতো। আমরা আশা করব এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতে লেখাপড়া করতে পারে তা নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে।  বিশেষ করে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য নতুন করে প্রবেশপত্র ইস্যুর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। দেশের চরাঞ্চলে দুর্বৃত্তদের দাপট কোনো নতুন ঘটনা নয়। গাইবান্ধার চরাঞ্চলে তারা কতটা বেপরোয়া বিদ্যালয় পুড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে তা স্পষ্ট হয়েছে।  এ অসভ্য ও বর্বরদের দৌরাত্ম্য বন্ধে প্রশাসন পদক্ষেপ নেবে এমনটিও কাম্য।

সর্বশেষ খবর