শুক্রবার, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

অশোভনীয় কসরত

শিক্ষকরা দায় এড়াতে পারেন না

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা চেয়ারম্যানের কাণ্ডকারখানা সামাজিক গণমাধ্যমে ঝড় তুলেছে। একজন জনপ্রতিনিধির কাণ্ডজ্ঞান নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে সংশয়। সোমবার উপজেলার নীলকমল ওছমানিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটওয়ারী। ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীদের শারীরিক কসরত দেখানো হয়। সামাজিক গণমাধ্যমে প্রচারিত ছবিতে দেখা গেছে, শারীরিক কসরত দেখানো পর্বে দুই দল শিক্ষার্থী হাতে হাত রেখে ‘সেতু’ তৈরি করেছে এবং আরেক ছাত্র তার ওপর উপুড় হয়ে শুয়ে আছে। ছাত্রটির পিঠ দিয়ে বানানো ‘মানবসেতু’র ওপর দিয়ে হাসিমুখ প্রধান অতিথি জুতা পায়ে হেঁটে পার হচ্ছেন। ‘শিক্ষার্থীদের অনুরোধে’ তিনি ওই কাজটি করেন বলে সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেছেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপজেলা চেয়ারম্যান। জনপ্রতিনিধির এমন কাণ্ডে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন শিক্ষাবিদসহ সুশীলসমাজের প্রতিনিধিরা। একজন জনপ্রতিনিধি কীভাবে এমন অশোভনীয় কাণ্ডে জড়িত থাকতে পারেন, সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা। তাদের মতে, একজন জনপ্রতিনিধি যদি শিক্ষার্থীদের ওপর দিয়ে জুতা পায়ে হেঁটে যান তবে তার কাছে জাতি আর কীইবা আশা করতে পারে।  নীলকমল ওছমানিয়া উচ্চবিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের শারীরিক কসরত হিসেবে মানবসেতু তৈরি এবং তার ওপর দিয়ে কারোর হেঁটে যাওয়ার বিষয়টি এলাকাজুড়ে পরিচিত। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে ফটোফ্রেমে এক সাবেক প্রধান শিক্ষক এ ধরনের মানবসেতু পার হচ্ছেন এমন ছবি সাঁটানো রয়েছে। কয়েক বছর আগে হাইমচর উপজেলার এক নির্বাহী কর্মকর্তা প্রধান অতিথি হিসেবে এসে মানবসেতু পার হন, যিনি বর্তমানে একটি মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদে কর্মরত। প্রতি বছরই ক্রীড়ানুষ্ঠানে এমন মানবসেতু তৈরি করা হয় এবং ওই সেতু পার হন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি। প্রশ্ন উঠেছে, এ ধরনের শারীরিক কসরতের রূপকার যারা সেই শিক্ষকদের দায়ও কম নয়। শিক্ষার্থীদের শারীরিক কসরত প্রদর্শন অবশ্যই আপত্তিকর বিষয় নয়। কিন্তু শিশু শিক্ষার্থীদের মানবসেতুর ওপর শিক্ষক বা জনপ্রতিনিধিরা হেঁটে যাবেন, এমন কসরত অবশ্যই নিন্দনীয়। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাই সচেতন হবেন— আমরা এমনটিই দেখতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর