শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

মশার উৎপাত

জনস্বস্তি আনতে উদ্যোগ নিন

মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে রাজধানীবাসী। সন্দেহ নেই এ সমস্যাটি রাজধানীর ঐতিহ্যের অনুষঙ্গ হিসেবেও বিবেচিত। ঔপনিবেশিক আমলেও মশা ঢাকার নগরজীবনে অস্বস্তি সৃষ্টি করেছে। পাকিস্তান আমলেও এটি ছিল বহুল আলোচিত সমস্যার নাম। গত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকে মন্ত্রী সুসাহিত্যিক হাবিবুল্লা বাহারকে বিব্রত অবস্থায় পড়তে হয়েছিল মশার উৎপাত এবং সংবাদ মাধ্যমের সমালোচনার বাণে। তিনি অবশ্য মশা নিধনে সাফল্য দেখিয়েছিলেন এবং প্রমাণ রেখেছিলেন সদিচ্ছা থাকলে সাফল্য ধরা দিতে বাধ্য। বাংলাদেশের সাড়ে চার দশকের ইতিহাসেও বার বার ঢাকার নির্বাচনী রাজনীতিতে মশার উৎপাত প্রভাব রেখেছে। ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের চমক লাগানো জয়ের পেছনে মশা সমস্যা সমাধানে পূর্ববর্তী মনোনীত মেয়রের ব্যর্থতা অন্যতম কারণ হিসেবে কাজ করেছে। নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি মশার উৎপাত থেকে রাজধানীবাসীকে রেহাই দিতে নানামুখী উদ্যোগ নেন। মশার মূককীট নিধনে রাজধানীর বিভিন্ন ডোবা ও ড্রেনে বিদেশ থেকে আমদানি করা গাপ্পি মাছ ছেড়ে দিয়ে তিনি চমক সৃষ্টি করেন। আন্তরিকতা সত্ত্বেও মশার উৎপাত রোধে তিনি যে শতভাগ সফল হননি তা পরবর্তীতে অপকটে স্বীকারও করেন। নগরবাসীর নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে রাজধানীকে দুই সিটি করপোরেশনে বিভক্ত করার পরও মশার উৎপাত বন্ধে দুই তরফের সাফল্যই প্রশ্নবিদ্ধ। মশা নিধনে দুই সিটি করপোরেশন তাদের বাজেট বাড়ালেও ফলাফল হতাশাজনক। অভিযোগ রয়েছে মশা নিধনের বরাদ্দকৃত অর্থের এক বড় অংশই চলে যায় লুটেরাদের পকেটে। মশা নিধনে যে ‘ওষুধ’ ছিটানো হয় তার মান নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। ফলে গত বছরের চেয়ে এ বছর মশা নিধনে দ্বিগুণ বাজেট বরাদ্দ সত্ত্বেও নগরবাসীর স্বস্তিদানে তা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। মশক নিধনে দুই সিটি মেয়রের আন্তরিকতা নিয়ে কারও প্রশ্ন না থাকলেও প্রশ্ন রয়েছে বাস্তবায়ন পর্যায়ে। নগরবাসীর স্বস্তিদানে কাঙ্ক্ষিত ফল পেতে হলে মশক নিধন কার্যক্রমের সর্বস্তরে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে।  লুটেরাদের যে কায়েমী স্বার্থবাদ উত্তরাধিকার সূত্রে দুই সিটির ঘাড়ে চেপে বসেছে তা নিয়ন্ত্রণে ঢাকার দুই মেয়রকে উদ্যোগী হতে হবে। পাশাপাশি বাড়াতে হবে নাগরিক সচেতনতাও।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর