সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

মাদক আগ্রাসন

প্রতিরোধে চাই সমন্বিত পদক্ষেপ

মাদক নিয়ন্ত্রণে মাদক ব্যবসায়ীর পাশাপাশি মাদক পাচারকারী এমনকি মাদকসেবীদের আইনের আওতায় আনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ প্রতিদিন আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে। মাদক আগ্রাসন থেকে যুব সমাজকে রক্ষায় দেশের সব সামাজিক শক্তিকে একযোগে কাজ করারও তাগিদ দিয়েছেন তারা। মাদক আগ্রাসন দেশের যুব সমাজকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে সৃষ্টি করছে অবক্ষয়। দেশের আইনশৃঙ্খলার জন্যও তা মূর্তমান হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কঠিন বাস্তবতায় গোলটেবিল বৈঠকে মাদক নিয়ন্ত্রণে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মতামত গুরুত্বের দাবিদার। দেশে মাদকসেবীর সংখ্যা প্রায় ৫২ লাখ। প্রতিবছর ৫ লাখ তরুণ-তরুণী মাদকাসক্তিতে জড়িয়ে পড়ছে। মাদকাসক্তদের ৪১ ভাগই বেকার এবং শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ১৪ ভাগ। সোজা কথায় শতকরা ৫৫ ভাগ মাদকসেবী মাদকের অর্থ জোগাতে অপরের ওপর নির্ভরশীল। তারা মাদকের অর্থ জোগাতে পারিবারিক জীবনে অশান্তি সৃষ্টি করে। ছিনতাইসহ অন্যান্য অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। সোজা কথায় গড়ে প্রতি দুজন মাদকাসক্তের একজন অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িতদের সিংহভাগই মাদকাসক্তের শিকার। এ অবস্থায় মাদক আগ্রাসন থাকতে সর্বাত্মক পদক্ষেপের বিকল্প নেই। মাদকের বিরুদ্ধে পারিবারিক ও সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, মাদক নিয়ন্ত্রণের জন্য যারা সংশ্লিষ্ট, তাদের অনেকের মধ্যেই সততার সংকট রয়েছে। টেকনাফে মাদক প্রতিরোধের নামে যেসব কমিটি গড়ে উঠেছে, সেগুলোর ৮০ ভাগ সদস্য নিজেরাই মাদক ব্যবসায় জড়িত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রতিটি এলাকার জনপ্রতিনিধিরা আন্তরিক ভূমিকা রাখলে মাদক আগ্রাসনের ইতি ঘটানো সম্ভব। এ ব্যাপারে স্কুল-কলেজের শিক্ষক এবং মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডার ধর্মীয় নেতাদের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। নৈতিক শিক্ষার ধারাকে জোরদার করা সম্ভব হলে মাদকাসক্তিতে জড়িয়ে পড়ার বিপদ অনেকাংশেই রোধ করা সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে পরিবারের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। সন্তানদের সর্বনাশ না চাইলে বাবা-মা-অভিভাবকদেরও সচেতন হতে হবে। তারা কাদের সঙ্গে মিশছে কীভাবে চলছে সে বিষয়ে নজর রাখলে বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর