বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

জাহাজ শ্রমিকদের ধর্মঘট

মালিক পক্ষের দায়িত্বশীল মনোভাব কাম্য

লাইটার জাহাজ শ্রমিকদের ধর্মঘটে চট্টগ্রাম বন্দরের পণ্য খালাসে গত চার দিন ধরে যে অচলাবস্থা চলছে তা দুর্ভাগ্যজনক। শ্রমিকরা যেসব দাবিতে ধর্মঘটে নেমেছে তার মধ্যে বেশ কিছু দাবি যুক্তিযুক্ত। নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের নামে জাহাজ মালিকরা পণ্য পরিবহনের ভাড়া বাড়িয়ে দিলেও শ্রমিকদের বাড়তি বেতন দেওয়া শুরু করেনি। যে কারণে শ্রমিকরা ধর্মঘটের পথ বেছে নিয়েছে। মালিকপক্ষ শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হলেও সময়ক্ষেপণের আশ্রয় নেওয়ায় অচলাবস্থা জিইয়ে রয়েছে। মালিক পক্ষ অবশ্য সমস্যার সমাধানে ২০ ফেব্রুয়ারি শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং বলেছে, আলোচনায় সমঝোতা না হলে শ্রমিকরা আন্দোলনের পথ বেছে নিতে পারবে। দুই পক্ষের সমঝোতার অভাবে চার দিন ধরে লাইটার জাহাজ শ্রমিকদের ধর্মঘট চলায় শুধু চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে সাড়ে ১১ লাখ টন পণ্য নিয়ে ৩২টি জাহাজ আটকা পড়েছে। জাহাজ থেকে পণ্য নামাতে দেরি হওয়ায় আমদানিকারকদের জাহাজপ্রতি প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ হাজার ডলার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দরের ভাবমূর্তির জন্যও লাইটার জাহাজের ধর্মঘট বিড়ম্বনা ডেকে আনছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, জাহাজ মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সমন্বয়হীনতা ও ইগোর কারণে ধর্মঘট দীর্ঘায়িত হচ্ছে এবং তাতে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। উভয় পক্ষের সদিচ্ছা থাকলে যেখানে একটা বৈঠকেই সমস্যার সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব সে ক্ষেত্রে সময় ক্ষেপণের আশ্রয় নেওয়া যথেচ্ছতার শামিল। লাইটার জাহাজ শ্রমিকদের ধর্মঘটে চট্টগ্রাম বন্দরেই সাড়ে ১১ লাখ টন পণ্য আটকা পড়ায় বাজারে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। শ্রমিকদের দাবি, জাহাজ মালিকদের অনুদার মনোভাবের কারণে তারা ধর্মঘটে নামতে বাধ্য হয়েছে। নতুন বেতন কাঠামো কার্যকরের দাবিতে যে ধর্মঘট চলছে তা এড়ানো যেত মালিক পক্ষ সময়মতো তা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিলে। ধর্মঘটের পেছনে যারাই দায়ী হোক এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বড় মাপে দেশের সাধারণ ভোক্তারা।  তাদের স্বার্থেই অবিলম্বে এ ধর্মঘটের অবসান হওয়া উচিত।  এ উদ্দেশ্যে গোয়ার্তুমির পথ থেকে সরে এসে আলোচনায় বসে সমস্যার সুরাহা করার উদ্যোগ নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর