বৃহস্পতিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস

জড়িতদের কঠোর শাস্তি দিন

পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার সম্ভ্রমের ওপর আঘাত হানছে। পরীক্ষা ব্যবস্থার মাহাত্ম্যকেই গিলে ফেলছে একের পর এক পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী কোনো কোনো শিক্ষকও জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ফলের দিক থেকে এগিয়ে রাখতে তারা পরীক্ষা শুরুর দুই ঘণ্টা আগেই প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খুলে ফেলেন  এমন তথ্যও পেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রশ্নপত্রের প্যাকেট যথাযথভাবে সংরক্ষণ না করা এবং এসএসসি পরীক্ষায় দায়িত্ব পালনে গাফিলতির দায়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত মঙ্গলবার ২০ শিক্ষক-কর্মচারীর এমপিওভুক্তি স্থগিত করেছে। শিক্ষামন্ত্রী দুঃখ করে বলেছেন, তাদের সবচেয়ে আস্থার জায়গা শিক্ষকরা। কিন্তু তাদের মধ্যেও কিছু দুর্নীতিবাজ ঢুকে পড়েছে। চলমান এসএসসি পরীক্ষায় গণিতের প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষার আগেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয় প্রশ্নপত্র। ইতিমধ্যে ভুয়া প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ এবং তাদের রিমান্ডে নিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁসের রহস্য ও এর সঙ্গে আর কারা জড়িত তা জানার চেষ্টা চলছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাওয়ায় গণিত পরীক্ষা বাতিলের বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে। যদিও শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, গণিতের পরীক্ষা এখনই বাতিল হচ্ছে না। পরীক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ায় পরীক্ষার আসল উদ্দেশ্য যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সন্দেহ নেই। ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র অনুসরণ করে নকলবাজরা লাভবান হচ্ছে এটিও ধরে নেওয়া যায়। অন্যদিকে পরীক্ষা বাতিল হলে লাখ লাখ পরীক্ষার্থীকে বাড়তি ঝামেলায় পড়তে হবে। যার কোনোটিই কাম্য হওয়া উচিত নয়। প্রশ্নপত্র ফাঁসে কোনো কোনো শিক্ষকের জড়িত থাকা দুর্ভাগ্যজনক এবং এটি শিক্ষকতা পেশার জন্য এক কলঙ্কজনক ঘটনা। এ অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের এমপিওভুক্তি স্থগিত করাই শুধু নয়, তাদের শিক্ষকতা পেশা থেকে বহিষ্কারের উদ্যোগ নিতে হবে। পরীক্ষার ক্ষেত্রে দুর্নীতি বন্ধে সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিদের শিক্ষকতা পেশায় আসার সুযোগ সৃষ্টিও জরুরি। এ উদ্দেশ্যে উেকাচের বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগের যে ঘৃণ্য পদ্ধতি দেশজুড়ে চালু রয়েছে তার অবসান ঘটাতে হবে।

সর্বশেষ খবর