বৃহস্পতিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

উধাও হচ্ছে সিলেটের টিলা

প্রশাসনের সচেতনতা কাম্য

পাহাড়-টিলা সিলেটের প্রকৃতিকে আলাদা বৈশিষ্ট্য দান করেছে। দেশের যে সব জেলা পর্যটনের স্বর্গভূমি হিসেবে পরিচিত সিলেট তার মধ্যে অন্যতম— তার প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের কারণেই। কিন্তু কিছু লোভী মানুষের জন্য এই মনোরম জনপদ টিলাশূন্য হতে চলেছে। দেশের উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও অসাধু প্রভাবশালীরা একের পর এক টিলা কেটে সিলেটের সহজাত সৌন্দর্যকে কেড়ে নিচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি মালিকানাধীন টিলা কেটে টিলাখোররা তৈরি করছে আলিশান বাড়ি ও রিসোর্ট। আবাসিক প্রকল্পে বালুর বিকল্প হিসেবে ভরাটের জন্য ঢালাওভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে টিলার মাটি। এক সময় সিলেটের শাহি ঈদগাহ, টিভি গেট, বালুচর, বিমানবন্দর এলাকা, মেজরটিলা, খাদিমপাড়া, লাক্কাতুরা, শাহপরাণ, বটেশ্বর, পাঠানটুলা ইত্যাদি এলাকায় প্রচুর পাহাড় ও টিলা থাকলেও এসব এলাকা তার আপন বৈশিষ্ট্য হারিয়ে ফেলেছে। পরিবেশবাদীদের আশঙ্কা, যে হারে টিলা কাটা হচ্ছে তাতে সিলেট অচিরেই টিলাশূন্য হয়ে পড়বে। টিলা কেটে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বাড়ি তৈরির ফলে দুর্ঘটনা ও মৃত্যুঝুঁকি বাড়ছে। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালত সিলেট সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি ছয় উপজেলায় পাহাড়-টিলা কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কিন্তু তারপরও টিলা কাটা থেমে নেই। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সর্বত্রই টিলা কেটে আলিশান বাড়ি ও অন্যান্য স্থাপনা তৈরি করা হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ব্যক্তিমালিকানাধীন কিছু টিলা মালিক ট্রাকে ট্রাক টিলার মাটি বিভিন্ন আবাসন কোম্পানির কাছে বিক্রি করছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সিলেটে যেভাবে টিলা কাটা হচ্ছে তা আইনের শাসনের ক্ষেত্রে আমরা কোথায় বাস করছি সে প্রশ্নটিই জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় একের পর এক টিলা কাটা হলেও তারা না দেখারই ভান করছেন। পরিবেশ সুরক্ষার দায়িত্ব যাদের তারা সরকার, জনগণ ও দেশের আইনের প্রতি দায়বদ্ধতার বদলে টিলাখোরদের উেকাচের কাছে নিজেদের বিবেককে বিক্রি করে দেওয়ায় সিলেটের প্রকৃতি হুমকির মুখে পড়েছে। এ ব্যাপারে প্রশাসন সংশ্লিষ্ট সবার সচেতনতা কাম্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর