শনিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

সুন্দরবন সুরক্ষার উদ্যোগ

সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সময় ক্ষেপণ দুঃখজনক

সুন্দরবন সুরক্ষায় সরকারের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে এমন বক্তব্য অনুদারতার শামিল এবং আমরা তেমন কোনো অভিযোগের সঙ্গে একমত পোষণ করতে চাই না। তবে বাংলাদেশের ঐতিহ্যের অনুষঙ্গ এ বাদাবন সুরক্ষায় সরকারের গৃহীত ইতিবাচক পদক্ষেপগুলোর বাস্তবায়নে যে সময় ক্ষেপণ চলছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুন্দরবন সুরক্ষায় এক বছর আগে বর্তমানে বিদ্যমান অভয়ারণ্যের পাশাপাশি আরও ১৮টি কম্পার্টমেন্টকে অভয়ারণ্য ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও ইতিবাচক এ সিদ্ধান্তটি এক বছর ধরে আটকা আছে। স্মর্তব্য, ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ বনভূমিটি বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট বা বাদাবন। সুন্দরবনে রয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রল হরিণ, লবণপানির কুমির, ৬ প্রজাতির ডলফিনসহ ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণী। ৩৩৪ প্রজাতির চিরসবুজ বৃক্ষরাজি, ১৬৫ প্রজাতির শৈবাল, ১৩ প্রজাতির অর্কিড এ বনভূমিকে সমৃদ্ধ করেছে। ৩১৫ প্রজাতির পাখি ও ২১০ প্রজাতির সাদা মাছের অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র এই বাদাবন। এসব প্রাণী ও বৃক্ষরাজির বংশবিস্তার ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গত বছরের ২১ জানুয়ারি শরণখোলা রেঞ্জের ৭টি, চাঁদপাই রেঞ্জের ৪টি, খুলনা রেঞ্জের ৪টি ও সাতক্ষীরা রেঞ্জের ৩টি অর্থাৎ মোট ১৮টি কম্পার্টমেন্টকে বন বিভাগ অভয়ারণ্য ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে ১৯৯৭ সালের ৬ ডিসেম্বর ইউনেস্কো কমিশন ৭টি কম্পার্টমেন্ট এলাকাকে পূর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণ অভয়ারণ্য নাম দিয়ে বিশ্বের ৫২২তম ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইট বা বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকা ঘোষণা করে। ‘বিলুপ্তপ্রায়’ তালিকায় থাকা ইরাবতীসহ ৬ প্রজাতির ডলফিন রক্ষায় ২০১২ সালে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের ৩টি এলাকার নদ-নদীকে ‘ডলফিন অভয়ারণ্য’ ঘোষণা করা হয়। বাদাবনের মৎস্যসম্পদ রক্ষায় ১৮টি নদ-নদী ও খালে মাছসহ সব ধরনের জলজপ্রাণী আহরণও নিষিদ্ধ করা হয়। সুন্দরবন সুরক্ষায় ১৮টি কম্পার্টমেন্টকে অভয়ারণ্য ঘোষণার সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যত্নবান হবে, আমরা এমনটিই দেখতে চাই। পাশাপাশি অবৈধভাবে বন নিধন এবং বাঘ ও হরিণ শিকার বন্ধেও নিতে হবে পদক্ষেপ। এটি সরকারের আশু করণীয় কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

সর্বশেষ খবর