সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

নির্বাচনে ই-ভোটিং পদ্ধতি

চালুর আগে রাজনৈতিক সমঝোতা জরুরি

আগামী নির্বাচনে পরীক্ষামূলকভাবে ই-ভোটিং বা ইভিএম চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। প্রধানমন্ত্রী আভাস দিয়েছিলেন আগামী নির্বাচনেই দেশে        ই-ভোটিং পদ্ধতি চালু হতে পারে। এর বিরোধিতা করা হয় সরকারের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপির তরফ থেকে। নির্বাচনের আর মাত্র ২২ মাস বাকি থাকায় এ সময়ের মধ্যে ই-ভোটিং চালু করা সম্ভব নয় বলে মনে করছে নির্বাচন কমিশন। যে কারণে তারা পরীক্ষামূলকভাবে পদ্ধতিটি যাচাই করার পক্ষে। নির্বাচন কমিশনের কারিগরি কমিটির সদস্যদের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উন্নত দেশের মতো বাংলাদেশেও ই-ভোটিং চালু হলে ভোট গ্রহণে স্বচ্ছতা বাড়বে। থাকবে না জাল ভোট দেওয়ার প্রবণতা। ভোট সুরক্ষার জন্য এই মেশিনে যুক্ত করা হবে ভোটারদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও চোখের আইরিশ। এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রের বাইরে ডিজিটাল বোর্ডে ভোট প্রদানের সংখ্যা দেখার সুযোগ পাবে সাধারণ মানুষ। এ উদ্দেশ্যে উন্নতমানের ডিজিটাল ভোটিং মেশিন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এ বিষয়ে কমিটির কাছে বেশ কিছু অবজারভেশন এসেছে। বিশেষজ্ঞদের অনেকে ইভিএমে নতুন কিছু সংযোজন, বিয়োজন এবং ত্রুটি-বিচ্যুতি মোচনে কয়েকটি সুপারিশ করেছেন। যা পর্যালোচনা করে নতুন নির্বাচন কমিশনের কাছে রিপোর্ট আকারে উপস্থাপন করা হবে। ইসির অনুমোদন পেলে মেশিন তৈরির কাজ শুরু হবে। সংসদ নির্বাচনে ই-ভোটিং চালু করতে হলে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে সংশোধনী আনতে হবে। জাতীয় নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং চালুর আগে রাজনৈতিক ঐকমত্যের বিষয়টিও জরুরি। ২২ মাসের মধ্যে এসব প্রক্রিয়া সেহেতু সম্পন্ন করা কঠিন হবে, সেহেতু পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে চাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ই-ভোটিং চালুর সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী হলেও সব কিছুর আগে এ পদ্ধতি সম্পর্কে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থা সৃষ্টি করতে হবে। নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি সব দলের আস্থা সৃষ্টির স্বার্থে এ পদ্ধতির ভালোমন্দ নিয়ে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পাশাপাশি ঐকমত্য সৃষ্টির উদ্যোগ নিতে হবে। এ বিষয়ে তাড়াহুড়ার আশ্রয় না নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে তা আগামী নির্বাচনে সীমিত পর্যায়ে চালু করার যে প্রস্তুতি নির্বাচন কমিশন নিচ্ছে তা অধিকতর যুক্তিযুক্ত ও গ্রহণযোগ্য বলে আমাদের ধারণা।

সর্বশেষ খবর