মঙ্গলবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

মেয়াদোত্তীর্ণ সিএনজি সিলিন্ডার

নিষিদ্ধকরণে এখনই ব্যবস্থা নিন

গাড়ির সিএনজি সিলিন্ডার বিস্ফোরণে প্রাণহানি একটি নিয়মিত ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। গত ছয় বছরে চারশর বেশি বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছে প্রায় আড়াইশ মানুষ। এসব ঘটনায় দেড় শতাধিক গাড়ি ভস্মীভূত হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় তিনশ গাড়ি। একের পর এক সিলিন্ডার বিস্ফোরণে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি সত্ত্বেও দুর্ঘটনার রাশ টানার কোনো উদ্যোগ না থাকা উদ্বেগজনক। বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিএনজিচালিত গাড়িতে ব্যবহূত সিলিন্ডারের প্রায় ৮৮ শতাংশই রিটেস্টের মেয়াদোত্তীর্ণ। রাজধানীসহ দেশব্যাপী বৈধ ও অনুমোদিত সিএনজি কনভার্সন সেন্টার রয়েছে ১৮০টি। সিএনজিচালিত গাড়ির রিটেস্ট করার জন্য কেন্দ্র রয়েছে মাত্র ১১টি। এত কম সংখ্যক কেন্দ্রের পক্ষে কিছুতেই ২ লাখ ৯৮ হাজার গাড়ির সিলিন্ডার রিটেস্ট করা সম্ভব নয়। এসব কেন্দ্রে এ পর্যন্ত মাত্র ৫৪ হাজার সিএনজি সিলিন্ডার রিটেস্টিং করা হয়েছে, যা মোট সিলিন্ডারের মাত্র ১২ ভাগ। বৈধ বা অবৈধভাবে গাড়িতে সংযোজিত আড়াই লক্ষাধিক সিএনজি সিলিন্ডার এখন জানমালের জন্য ভয়ঙ্কর হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়ক-মহাসড়কে চলন্ত অবস্থায় প্রায়ই গাড়ির গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হচ্ছে, দুর্ঘটনায় যানবাহন ভস্মীভূতসহ প্রাণহানিও ঘটছে অহরহ। বৈধভাবে সংযোজিত দুই লক্ষাধিক সিলিন্ডার ইতিমধ্যে রিটেস্টের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে আছে, এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নকল-ভেজাল নিম্নমানের অসংখ্য সিলিন্ডার। রিটেস্টবিহীন সিলিন্ডারগুলো চরম ঝুঁকি সত্ত্বেও বাস, ট্রাক, প্রাইভেট কারে ব্যবহূত হচ্ছে। মেয়াদোত্তীর্ণ, ত্রুটিযুক্ত সিলিন্ডারগুলো একেকটি জীবন্ত বোমা হিসেবে বিরাজ করছে। দেশে এ পর্যন্ত সিএনজি চালিত যেসব সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়েছে তার প্রতিটিই ছিল ত্রুটিপূর্ণ। এসব সিলিন্ডারে কোনো সেফটি সিস্টেম ছিল না। ইদানীং পুরনো জাহাজের মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডারকেও গাড়িতে ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। ভয়ঙ্কর ঝুঁকি হয়ে ওঠা এসব সিএনজি সিলিন্ডার যানবাহনের যাত্রীই শুধু নয় পথচারীদের কিংবা অন্যান্য যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের জন্যও হুমকি হয়ে চলাচল করছে। জনস্বার্থে মেয়াদোত্তীর্ণ গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহারের ওপর কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করা দরকার। রাজপথে চলাচলকারী মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডারবাহী গাড়ি আটকের বিষয়টিও ভাবা যেতে পারে।

সর্বশেষ খবর