সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

ইসলামের দৃষ্টিতে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক

মাওলানা আবদুল খালেক

দাম্পত্য জীবনে পারস্পরিক আস্থা এবং সম্মানের সম্পর্ক বজায় রাখাকে ইসলাম বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নববিবাহিত কাউকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতেন তখন বলতেন : ‘আল্লাহতায়ালা তোমাকে বরকত দান করুন, তোমাদের উভয়কে বরকত দান করুন এবং তোমাদের দুজনের মধ্যে কল্যাণময় সম্পর্ক বজায় রাখুন’ (মুসনাদে আহমাদ থেকে মিশকাতে)। স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে এটি ইসলামী পারিবারিক জীবনের অলঙ্ঘনীয় বিষয়। স্বামী কিংবা স্ত্রী কারোর অবিশ্বস্ততাকে ইসলাম অনুমোদন করে না। কোনো স্বামী স্ত্রীর বদলে অন্য কোনো নারীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে তুললে তা ইসলামী অনুশাসনে মারাত্মক অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। একইভাবে কোনো স্ত্রী পর পুরুষের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুললে সেটিও একই ধরনের অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। রোজ কেয়ামতেও ব্যভিচারের অপরাধে জড়িত পুরুষ বা নারীর স্থান হবে জাহান্নাম। ইসলাম স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সদাচরণের ওপর গুরুত্ব দেয়। স্ত্রীর সঙ্গে স্বামীর অসদাচরণের জন্য তাকে যেমন রোজ কেয়ামতে জবাবদিহি করতে হবে, তেমন কোনো নারী স্বামীর সঙ্গে অসদাচরণ করলে তাকেও জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে। হজরত আবু আইয়ুব আনসারী (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল (সা.) বলেছেন, কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যে বিরোধ মীমাংসা করা হবে তাহলো এক স্বামী ও তার স্ত্রীর বিরোধ। আল্লাহর শপথ! (সে সময়) স্ত্রীর জিহ্বা কথা বলবে না, বরং তার হাত-পা সাক্ষ্য দেবে, পৃথিবীতে সে তার স্বামীর সঙ্গে এই এই আচরণ করেছে। আর স্বামীর হাত-পাও সাক্ষ্য দেবে যে, সে তার স্ত্রীর সঙ্গে এই এই ভালো আচরণ বা এই এই খারাপ আচরণ করেছে। অতঃপর আল্লাহর এজলাসে মনিব ও কর্মচারীসংক্রান্ত মামলা উঠবে। সেদিন কোনো আর্থিক জরিমানা করে বিরোধ মেটানো হবে না। বরং মজলুমকে জালিমের নেক আমলগুলো দিয়ে দেওয়া হবে এবং মজলুমের বদ আমলসমূহ জালিমের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হবে। অবশেষে প্রতাপশালী অহংকারী অত্যাচারীদের লোহার জিঞ্জিরে পেঁচিয়ে হাজির করা হবে। অনন্তর বলা হবে তাদের দাবড়িয়ে জাহান্নামে নিয়ে যাও। -তাবরানি। ইসলামী দৃষ্টিতে সেই ব্যক্তিই উত্তম, যে তার স্ত্রীর দৃষ্টিতে উত্তম।

     লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর