মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

নির্বাচনী হানাহানি

দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতিরই কুফল

পেশিশক্তির পূজারিরা রাজনীতিতে জেঁকে বসলে কী পরিণতি অনিবার্য হয়ে ওঠে প্রতিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনা তারই প্রমাণ। এই অপসংস্কৃতির ধারাবাহিকতায় সিলেটের ওসমানীনগরে উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক এতিম যুবক প্রাণ হারিয়েছে। আহত হয়েছে শতাধিক। সরকারি দলের অফিশিয়াল প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে ওসমানীনগর উপজেলার সাদীপুর ইউনিয়নের উত্তর কালনীরচর ও দক্ষিণ কালনীরচর গ্রামের মানুষ রবিবার দুই পক্ষের হয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে শক্তি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয় এবং এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে কমপক্ষে ৫০ রাউন্ড গুলিবিনিময় ঘটে। নির্বাচনে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোটাররা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। যিনি বেশি ভোট পাবেন তিনিই নির্বাচিত হবেন এমনটিই নিয়ম। প্রার্থীরা তাদের পক্ষে ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর অধিকারও রাখেন। কিন্তু নির্বাচনের কোনো পর্যায়ে পেশিশক্তি কিংবা অস্ত্রবল প্রদর্শনের সুযোগ নেই। প্রথাসিদ্ধ রাজনীতিকরা এ ধরনের ঘৃণ্য পথ বেছে নেওয়ার কথা ভাবতেও পারেন না। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো সাধারণ মানুষের বদলে পেশিজীবীদের শক্তির উৎস ভাবায় দেশের নির্বাচনব্যবস্থা কলঙ্কিত হয়ে পড়েছে। প্রতিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হানাহানি অনিবার্য হয়ে উঠছে। বিশেষ করে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে হানাহানি যেন নির্বাচনী ব্যবস্থার অনুষঙ্গে পরিণত হয়েছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে দেশের নির্বাচনব্যবস্থা ভেঙে পড়ে এবং গণতন্ত্রের অনুশীলন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে ওঠে। সে ধারা থেকে জাতি যখন সরে আসার চেষ্টা করছে সে মুহূর্তে সিলেটের এক উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা আশা করব, এ অকাম্য হানাহানিতে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ ব্যাপারে সরকার ও নির্বাচন কমিশন নিজেদের সুনামের স্বার্থেই সক্রিয় হবে এমনটিই প্রত্যাশিত। পাশাপাশি আগামী মাসে দুটি সংসদ উপনির্বাচনসহ বিভিন্ন পৌরসভা ও উপজেলার যে ২৫টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তার প্রতিটি যাতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয় তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

নির্বাচনী সংঘাত বন্ধে দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতিতে বাদ সাধারও উদ্যোগ নিতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোকে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর