বুধবার, ১ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

মানহীন ওষুধের বিরুদ্ধে যুদ্ধ

আদালতের নির্দেশ প্রশংসনীয়

মানহীন ওষুধ তৈরির বিরুদ্ধে আবারও প্রশংসনীয় শক্ত মনোভাব দেখিয়েছে উচ্চ আদালত। গত সোমবার ২৮টি কোম্পানির অ্যান্টিবায়োটিক, স্টেরয়েড, অ্যান্টিক্যান্সার ও হরমোন সংক্রান্ত ওষুধের উৎপাদন বন্ধে সরকারকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত উচ্চ আদালতের একটি বেঞ্চ। এর আগে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের একই বেঞ্চ মানসম্মত ওষুধ উৎপাদনে ব্যর্থ ২০টি কোম্পানির সব ধরনের ওষুধ এবং ১৪টি কোম্পানির অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ দেন। গত সোমবার উচ্চ আদালত ২৮টি কোম্পানির সুনির্দিষ্ট কিছু ওষুধ উৎপাদন বন্ধের পাশাপাশি এ নির্দেশ কতটুকু বাস্তবায়িত হয়েছে সে সম্পর্কে স্বাস্থ্য ও শিল্প সচিব এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ পাঁচজনকে দুই সপ্তাহের মধ্যে তাদের কাছে প্রতিবেদন দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে। মানুষ সুস্থ হওয়ার জন্য ওষুধ ব্যবহার করে। কিন্তু সে ওষুধ যদি মানহীন হয় তবে সুস্থতার বিষয়টি অনিশ্চিতই শুধু নয়, জীবনের জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। সংসদীয় কমিটি মানহীন ওষুধ তৈরির জন্য ইতিপূর্বে বেশ কিছু ওষুধ কোম্পানিকে চিহ্নিত করে। সরকার এসব কোম্পানিকে কালো তালিকাভুক্ত করলেও তারা নানা কৌশলে সে নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে চলছিল। উচ্চ আদালত পর পর দুটি তাত্পর্যপূর্ণ রায়ের মাধ্যমে সে অপকৌশলে লাগাম পরানো হলো। দেশের মানুষের জীবন সুরক্ষার পক্ষে আদালতের রায় দেশের ১৬ কোটি মানুষের জন্য ‘সুবিচার’ নিশ্চিত করেছে। আদালতের এ রায় ওষুধ উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীল হতে বাধ্য করবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই। মানহীন ওষুধ উৎপাদনের জন্য উচ্চ আদালতে দুই পর্যায়ে ৬২টি কোম্পানিকে চিহ্নিত করা হলেও এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা অনেক বেশি। আমরা আশা করব এ রায়ের ফলে মানহীন ওষুধ তৈরির সঙ্গে যারাই জড়িত তাদের সবার ক্ষেত্রেই ওষুধ প্রশাসন কঠোর হওয়ার সক্ষমতা দেখাবে।  ওষুধ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা দেশবাসীর ট্যাক্সের টাকায় বেতন-ভাতা পান, তাদের স্বার্থ রক্ষা নৈতিক কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত। সে ক্ষেত্রে ব্যত্যয় ঘটায় মানহীন ওষুধ বাজারে বিক্রির সাহস দেখাচ্ছে কোনো কোনো ওষুধ কোম্পানি।  এ অপ্রত্যাশিত অবস্থার অবসান কাম্য।

সর্বশেষ খবর