বুধবার, ১ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

কসোভোকে স্বীকৃতি

মুসলিম উম্মাহর ঐক্য জোরদার করবে

বাংলাদেশ কসোভোকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ইউরোপের বলকান অঞ্চলের ২০ লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত ১০ হাজার ৮৮৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ দেশটি ২০০৮ সালে সার্বিয়ার অধীনতা ছিন্ন করে একতরফাভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। আয়তনে ও জনসংখ্যায় ক্ষুদ্র হলেও কসোভোর রয়েছে সমৃদ্ধ অতীত। দেশটির স্বাধীনতাও এসেছে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে। কসাভো প্রথম শতাব্দীতে রোমানদের দখলে আসে। ষষ্ঠ শতাব্দীতে এ জনপদে স্লাভদের বসতি শুরু হয় এবং তারা রোমানদের দখলমুক্ত হওয়ার জন্য সংগ্রাম শুরু করে। দ্বাদশ শতাব্দীতে এ দেশটিতে সার্বিয়ার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৩৮৯ সালে তুরস্কের ওসমানিয়া শাসকরা কসোভোতে তাদের দখলস্বত্ব কায়েম করে। ৫০০ বছর ধরে কসোভোতে উড়েছে ওসমানীয় খেলাফতের পতাকা। এ সময় দেশটিতে আলবেনীয় তথা মুসলমানদের সংখ্যাধিক্য প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯১২ সালের বলকান যুদ্ধে সার্বিয়া কসোভো দখল করে। ১৯৪৬ সালে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের অবসান হওয়ার পর বলকান অঞ্চলের দেশগুলোকে নিয়ে মার্শাল টিটোর নেতৃত্বে যুগোস্লাভিয়া নামের ফেডারেল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে কসোভো তাতে যুক্ত হয়। ১৯৭৪ সালে যুগোস্লাভীয় সংবিধানে তারা স্বায়ত্তশাসিত রাজ্যের মর্যাদা পায়। ১৯৯০ সালে এ স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে কসোভোকে সার্বিয়ার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৯১ সালে যুগোস্লাভিয়া ভেঙে গেলে কসোভো স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম শুরু করে। সার্বিয়া সে সংগ্রামকে শক্তি বলে দমন করে। ১৯৯৬ সালে নতুনভাবে শুরু হয় স্বাধীনতা সংগ্রাম। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের দমনে সার্বিয়া দমননীতির আশ্রয় নেয়। ১৯৯৯ সালে ন্যাটো কসোভোর পক্ষে এগিয়ে আসে এবং সার্বীয় অবস্থানে বোমা হামলা শুরু করে। বাধ্য হয়ে সার্বিয়া আন্তর্জাতিক শান্তিচুক্তির মাধ্যমে কসোভো থেকে সরে আসে। জাতিসংঘ এ ক্ষুদ্র দেশটির প্রশাসন ও শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব নেয়। জাতিসংঘ শান্তি বাহিনীর সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের সৈন্যও মোতায়েন হয় সে দেশে।  ২০০৮ সালে একতরফা স্বাধীনতা ঘোষণার পর এ পর্যন্ত ১১৩ দেশ কসোভোকে স্বীকৃতি দিয়েছে।  স্বীকৃতির ফলে মুসলিম প্রধান কসোভোর সঙ্গে বাংলাদেশের গভীর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক যেমন গড়ে উঠবে তেমন মুসলিম উম্মাহর ঐক্যকেও জোরদার করবে এ ইতিবাচক সিদ্ধান্ত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর