বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

পাঁচ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড

হোশি কোনিও হত্যা মামলার দ্রুত বিচার প্রশংসনীয়

জাপানি নাগরিক হোশি কোনিও হত্যা মামলার রায়ে জেএমবির পাঁচ জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। রংপুরের বিশেষ জজ আদালতের বিচারক গত মঙ্গলবার চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী এ হত্যা মামলার রায় দেন। হোশি কোনিও হত্যার ১৭ মাসের মাথায় মামলার তদন্ত এবং বিচার সম্পন্ন করার ঘটনা নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক বিষয়। দীর্ঘসূত্রতার অপঐতিহ্য এড়িয়ে এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবাই যে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন তা অন্যসব মামলার ক্ষেত্রে অনুসৃত হবে আমরা এমনটিই দেখতে চাই। মানবতাবাদী জাপানি নাগরিক হোশি কোনিও বাংলাদেশে এসেছিলেন কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নের প্রত্যাশা নিয়ে। রংপুরের প্রত্যন্ত গ্রামে তিনি উন্নতমানের ঘাস উৎপাদনের একটি খামার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কৃষকরা এ ঘাস উৎপাদন করে গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করবে এবং তা তাদের জীবনমানের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে— এই মহান ব্রতকেই তিনি করণীয় কর্তব্য বলে বেছে নিয়েছিলেন। গ্রামের সহজ-সরল মানুষের সান্নিধ্যে তাদেরই একজন হয়ে উঠেছিলেন তিনি। এমনকি তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। ২০১৫ সালের ৩ অক্টোবর হোশি কোনিওকে নৃশংসভাবে হত্যা করে জেএমবির সদস্যরা। রংপুরের প্রত্যন্ত গ্রামে একজন বিদেশির হত্যাকাণ্ডের ঘটনা শুধু দেশে নয়, সারা বিশ্বে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল ধারণা সৃষ্টিতে মদদ জোগায়। হত্যাকাণ্ডের পর এর সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত জড়িত বলে ব্যাপকভাবে সন্দেহ করা হয় দায়িত্বশীল মহল থেকে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ ঘটনার তদন্তে আসল অপরাধীদের চিহ্নিত করে তাদের বিচারের সম্মুখীন করার যে কৃতিত্ব দেখিয়েছে তা প্রশংসার দাবিদার। রংপুরের বিশেষ জজ আদালত এ হত্যাকাণ্ডের ছয় আসামির মধ্যে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামির মধ্যে একজন এখনো পলাতক। আমরা আশা করব আদালতের এ রায় দ্রুত বাস্তবায়নে সম্ভাব্য সব কিছু করা হবে। পলাতক দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে গ্রেফতারের জন্যও নেওয়া হবে উদ্যোগ।  পাশাপাশি যে জঙ্গিরা বাংলাদেশ ও পবিত্র ধর্ম ইসলামের সুনাম নষ্ট করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে তাদের আইনের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সব ধরনের তত্পরতা চালাবে এমনটিও কাম্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর