সোমবার, ৬ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

তিন ধরনের লোকের দোয়া আল্লাহ ফিরিয়ে দেন না

মাওলানা মুহম্মাদ সাহেব আলী

আল্লাহ চান বান্দা তার কাছে দোয়া করুক। আল্লাহ বান্দার মনোবাঞ্ছা পূরণে উন্মুখ থাকেন। তবে সে দোয়ার সঙ্গে পবিত্রতার সম্পর্ক থাকতে হবে। বান্দার কোনো অপবিত্র দোয়া আল্লাহর কাছে কাম্য নয়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলে আকরাম (সা.) বলেছেন, আল্লাহ পূতপবিত্র এবং তিনি কেবল পবিত্র জিনিসই কবুল করেন। আর আল্লাহ মুমিনদের ওই বিষয়েরই হুকুম দিয়েছেন, নবী রসুলদের তিনি যে বিষয়গুলো সম্পর্কে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, হে রসুলগণ! পবিত্র বস্তু আহার করুন এবং নেক কাজ করুন। তিনি বলেছেন, হে মুমিনগণ! তোমরা পবিত্র বস্তুসামগ্রী আহার কর, যেগুলো আমি তোমাদের রিজিক হিসেবে দান করেছি। তারপর রসুলুল্লাহ (সা.) এমন ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দীর্ঘ সফর করেছে, তার মাথার কেশ অবিন্যস্ত, শরীরও ধূলিমলিন। সে আকাশের দিকে হাত উঠিয়ে বলছে, হে আমার রব! হে আমার রব! কিন্তু তার আহার্য হচ্ছে হারাম, পানীয় হারাম, পোশাকও হারাম। হারাম খেয়েই তার বয়োবৃদ্ধি ঘটেছে। তাই তার দোয়া কীভাবে কবুল হবে? (মুসলিম শরিফ)। কোন কোন বান্দার দোয়া কবুল হয় এ বিষয়ে আল্লাহর প্রিয় হাবিব রসুল (সা.)-এর বর্ণনায় পাওয়া যায়। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) সূত্রে নবী করিম রসুল (সা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, পাঁচটি দোয়া রয়েছে, যেগুলো কবুল হয় : ১. মজলুমের দোয়া, যে পর্যন্ত সে প্রতিশোধ গ্রহণ না করে ২. হাজীর দোয়া, যে পর্যন্ত সে বাড়িতে ফিরে না আসে ৩. আল্লাহর পথের মুজাহিদের দোয়া, যে পর্যন্ত সে জিহাদ থেকে বসে না পড়ে ৪. অসুস্থ ব্যক্তির দোয়া, যে পর্যন্ত সে সেরে না উঠে ৫. কোনো মুসলমান ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে অপর মুসলমান ভাইয়ের দোয়া। তারপর তিনি বললেন, এগুলোর মধ্যে আবার সবচেয়ে দ্রুত কবুল হয় কোনো মুসলমান ভাইয়ের জন্য তার অনুপস্থিতিতে কৃত দোয়াটি  (বায়হাকি)। এ হাদিসে এক মুসলমান যাতে অপর মুসলমানের অনুপস্থিতিতে দোয়া করে সে ব্যাপারে উৎসাহ জোগানো হয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুল (সা.) বলেছেন, তিন ধরনের লোকের দোয়া কখনো ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।  ১. রোজাদার যখন ইফতার করে,            ২. ন্যায়পরায়ণ শাসকের দোয়া,               ৩. মজলুমের দোয়া। মজলুম ব্যক্তির দোয়াকে আল্লাহ মেঘমালার ওপর উঠিয়ে নেন এবং এ জন্য আসমানের সব দরজা খুলে দেওয়া হয়। আল্লাহ বলেন, আমার ইজ্জতের কসম! আমি তোমাকে অবশ্যই সাহায্য করব, যদিও তা কিছুকাল পরে হয় (তিরমিযি)।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে বেশি বেশি দোয়া করার তাওফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামী গবেষক

সর্বশেষ খবর