বুধবার, ৮ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

ট্যানারি বন্ধের নির্দেশ

হাই কোর্টের আদেশ অভিনন্দনযোগ্য

রাজধানীর পরিবেশ দূষণের সবচেয়ে বড় উৎস হাজারীবাগের ট্যানারিগুলোর কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। হাজারীবাগ থেকে সাভারে যেসব ট্যানারি এখনো সরিয়ে নেওয়া হয়নি তারা এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে। বিচারপতি রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. সেলিমকে নিয়ে গঠিত হাই কোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ সংশ্লিষ্ট ট্যানারিগুলোর গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশও দিয়েছে। আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে তাদের সর্বাত্মক সহায়তা দিতে স্বরাষ্ট্র ও শিল্প মন্ত্রণালয় এবং আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আগামী ৬ এপ্রিল হাই কোর্টে দাখিল করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্ট গত সোমবার এই তাত্পর্যপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের শুনানিতে বেলার পক্ষ থেকে বলা হয়, হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি স্থানান্তরে ২০১০ সালের অক্টোবরে ছয় মাস সময় বৃদ্ধি করেছিল হাই কোর্ট। তারপর আদালত আর সময় বাড়ায়নি। তারপরও ট্যানারিগুলো আদালতের রায় লঙ্ঘন করে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ইতিমধ্যে ৪৩টি ট্যানারি সাভারে স্থানান্তর করা হয়েছে। সেগুলো সাভারে স্থানান্তর হলেও অন্য ট্যানারিগুলো সময় ক্ষেপণের আশ্রয় নিয়েছে। স্মর্তব্য, বারবার সরকারি নির্দেশনা অগ্রাহ্য হওয়ায় গত ৩১ জানুয়ারির পর হাজারীবাগে কাঁচা চামড়া প্রবেশে বাধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় শিল্প মন্ত্রণালয়। কিন্তু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দৃঢ় মনোভাবের অভাবে ট্যানারি স্থানান্তর অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়ায়। শেষ পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে আদালতের অনুমতি ছাড়াই ট্যানারি সরাতে মার্চ মাস পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়ায় বিষয়টিকে আইনবহির্ভূত বলে অভিহিত করে আদালতের শরণাপন্ন হয় পরিবেশবাদীরা।  আদালতের এই তাত্পর্যপূর্ণ রায় পরিবেশ দূষণের কবল থেকে হাজারীবাগ ও সংলগ্ন এলাকার মানুষকে রক্ষায় অবদান রাখবে বলে আশা করা যায়। বুড়িগঙ্গার দূষণ রোধেও আদালতের আদেশ ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখবে এমনটিও প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর