শুক্রবার, ১০ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

বিনাবিচারে কারাভোগ

এ ভোগান্তির অবসান হোক

বিনাবিচারে কারাভোগ গণতান্ত্রিক সমাজে অকল্পনীয় বিষয়। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি এ অবাঞ্ছিত ঘটনা আমাদের দেশে অহরহ ঘটছে। আশার কথা, এ লজ্জা থেকে রেহাই পেতে অপরাধের দায়ে আটক ব্যক্তিরা বিনাবিচারে যাতে দীর্ঘদিন আটক না থাকে সে লক্ষ্যে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করতে সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। এ দুর্ভোগের অবসানে এগিয়ে এসেছে দেশের বিচার বিভাগ। দীর্ঘদিন ধরে যারা বিনাবিচারে আটক রয়েছেন তাদের মুক্তির ব্যাপারে তারা উদ্যোগী ভূমিকা গ্রহণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী সংসদে প্রশ্নোত্তরকালে বলেছেন বিনা অপরাধে যারা কারাগারে আটক রয়েছেন, তারা সংশ্লিষ্ট আটককারী কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতিপূরণ চাইতে পারেন। যদি কেউ রাষ্ট্রের কাছে ক্ষতিপূরণ চাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন আইনে সে বিধানও রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে জানান, তিনি যখন জেলে ছিলেন তখন জানতে পারেন অনেক মানুষ বিনা অপরাধে জেলে আটক অবস্থায় আছে। জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা এবং কিছু এনজিওর মাধ্যমে তাদের কারাগার থেকে মুক্ত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিনা অপরাধে কারাগারে যারা আটক রয়েছেন, রাষ্ট্রের কাছে তাদের ক্ষতিপূরণ চাওয়ার অধিকার স্বীকার করে প্রকারান্তরে এ প্রবণতার বিরুদ্ধেই অবস্থান নিয়েছেন। রাষ্ট্রের নাগরিকদের মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে যা একটি আশাজাগানিয়া ঘটনা বলে বিবেচিত হওয়ার দাবি রাখে। আইন অঙ্গনে যে কথাটি বারবার উচ্চারিত হয় তা হলো বিচারের দীর্ঘসূত্রতা বিচারহীনতার নামান্তর। সাম্প্রতিক সময়ে এ অকাম্য অবস্থার অবসানে বিচার দ্রুত সম্পন্ন করতে সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মামলার অভিযোগ গঠন দ্রুততর করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। বিচার বিভাগও দ্রুত বিচারের বিষয়টি সমধিক গুরুত্ব দিচ্ছে যা বিনাবিচারে আটক থাকার বিড়ম্বনার অবসানে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়। বিনাবিচারে কাউকে যাতে দীর্ঘদিন কারাগারে আটক থাকতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে সরকার ও বিচার বিভাগকে একযোগে কাজ করতে হবে।  দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে বিচার বিভাগকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা জোগাতে হবে। আইনজীবীদেরও দ্রুত বিচার নিশ্চিতকরণে ইতিবাচক ভূমিকা পালনে এগিয়ে আসতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর