শনিবার, ১১ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

অপ্রতিরোধ্য মাদক আগ্রাসন

রাজনৈতিক কানেকশনে আঘাত হানতে হবে

মাদক আগ্রাসনের অপ্রতিরোধ্য গতি কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না, যা একটি দুঃসংবাদ বলে অভিহিত হওয়ার যোগ্য। বাংলাদেশ প্রতিদিনের শীর্ষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবৈধ অস্ত্র, অর্থ আর রাজনৈতিক প্রভাবে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে মাদক মাফিয়ারা। সবচেয়ে বিপজ্জনক খবর হলো, দেশের ৩২ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা কার্যত শাসন করছেন মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চক্রের সদস্যরা। তাদের সহায়তায় সীমান্ত এলাকার ৫১ পয়েন্ট দিয়ে পাচার হয়ে আসছে হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য। মাদক সিন্ডিকেটের জালের মাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়ছে সারা দেশে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও পেরে উঠছে না মাদক কেনাবেচা চক্রের সদস্যদের সঙ্গে। মাদকের ডেরায় অভিযান চালালেই তারা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাল্টা হামলা চালাচ্ছেন। গত বুধবার ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের বদরপুরে মাদকবিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালতে হামলা চালানোর ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন মাদক ব্যবসায়ীরা। যে হামলায় একজন আনসার সদস্য নিহত এবং ম্যাজিস্ট্রেটসহ দুজন আহত হয়েছেন। মাদক ব্যবসায়ীরা আনসার সদস্যের অস্ত্রটিও লুট করে নিয়ে যাওয়ার ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। অগাধ অর্থের মালিক মাদক সিন্ডিকেট সদস্যদের পেছনে রাজনৈতিক দলের স্থানীয় পর্যায়ের প্রভাবশালী নেতাদের সহযোগিতা থাকায় তাদের শক্তি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাজনৈতিক কর্মীরাও জড়িয়ে পড়ছেন মাদক পাচার ও বিপণনের সঙ্গে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্যের সহযোগিতা থাকায় তারা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের কাছে পাত্তা পাচ্ছে না। বিজিবি ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অভিযানে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মাঠ পর্যায়ের লোকজন ধরা পড়লেও মূল হোতারা থেকে যান ধরাছোঁয়ার বাইরে। যারা ধরা পড়ছেন, তারাও আবার আইনের ফাঁক-ফোকর গলিয়ে দ্রুত বেরিয়ে যাচ্ছেন। মাদক আগ্রাসনের টুঁটি চেপে ধরতে হলে এর রাজনৈতিক কানেকশনের অবসান ঘটাতে হবে। প্রশাসনের সঙ্গে মাদক বেচাকেনা চক্রের সম্পর্কে বাদ সাধতে হবে। মাদক পাচারের মামলায় কেউ গ্রেফতার হলে আইনের ফাঁক-ফোকর গলিয়ে যাতে বেরিয়ে আসতে না পারে সে বিষয়টিও নিশ্চিত করা দরকার।

সর্বশেষ খবর