রবিবার, ১২ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

মশার আগ্রাসন বাড়ছেই

মশা মারার ওষুধে কাহিল মানুষ

রাতে মশা দিনে মাছি এই নিয়ে ঢাকায় আছি— এটি ছিল চার যুগ আগের একটি সুপ্রচলিত প্রবচন। মাছির উৎসাদন স্থল সীমিত হয়ে পড়ায় ঢাকায় মাছির উপদ্রুব এখন অনেকটাই সীমিত। তবে মশার দৌরাত্ম্য যেন দিন দিন বাড়ছে। মশা মারার জন্য ওষুধ ছিটানো হলেও তাতে মানুষ কাহিল হলেও কাবু হয় না বেপরোয়া মশা। মশার ওষুধের ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়ায় হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, ক্যান্সার, ফুসফুস, কিডনিসহ নানা রোগের বিপদ বাড়ছে। মশার ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ও পণ্যের হার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেগুলোর মান ও প্রয়োগ নিয়েও বাড়ছে সংশয়। সন্দেহ নেই, মশা নিধনে সরকার ও দুই সিটি করপোরেশনের আন্তরিকতার ঘাটতি নেই। কিন্তু সে প্রয়াসের সুফল কোনোভাবেই কাঙ্ক্ষিত নয়। গত সাত দশকের ইতিহাসে ঢাকার নির্বাচনী রাজনীতিতে মশার উৎসাত সব সময় ইস্যু হিসেবে সামনে এসেছে। ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মশার মূককীট নিধনে রাজধানীর বিভিন্ন ডোবা ও ড্রেনে বিদেশ থেকে আমদানি করা গাপ্পি মাছ ছেড়ে চমক সৃষ্টি করেন। আন্তরিকতা সত্ত্বেও মশার উৎসাত রোধে তিনিও শতভাগ সফল হননি যা পরবর্তীতে অপকটে স্বীকারও করেছেন। নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার নামে রাজধানীকে দুই সিটি করপোরেশনে বিভক্ত করার পরও মশার উৎসাত বন্ধে দুই তরফের সাফল্যই প্রশ্নবিদ্ধ। মশা নিধনে দুই সিটি করপোরেশন বাজেট বাড়ালেও তাতে টাকার শ্রাদ্ধই শুধু নিশ্চিত হয়েছে। মশা নিধনের বরাদ্দকৃত অর্থের এক বড় অংশই চলে যায় লুটেরাদের পকেটে এমন অভিযোগ জোরেশোরেই উচ্চারিত হয়। মশা নিধনে যে ‘ওষুধ’ ছিটানো হয় তার মান নিয়েও প্রশ্ন কম নয়। ফলে মশা নিধনে দ্বিগুণ বাজেট বরাদ্দ সত্ত্বেও নগরবাসীর স্বস্তিদানে তা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। মশক নিধনে দুই সিটি মেয়রের আন্তরিকতা নিয়ে কারোর প্রশ্ন না থাকলেও বাস্তবায়ন পর্যায়ে অভিযোগের শেষ নেই। মশা নাশক ওষুধ কেনা এবং বিতরণে রয়েছে শুভঙ্করের ফাঁকির অভিযোগ। নগরবাসীর স্বস্তি নিশ্চিতকরণে মশক নিধন কার্যক্রমের সর্বস্তরে শতভাগ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। লুটেরাদের যে কায়েমি স্বার্থবাদ উত্তরাধিকার সূত্রে দুই সিটির ঘাড়ে চেপে বসেছে তা নিয়ন্ত্রণে ঢাকার দুই মেয়রকে উদ্যোগী হতে হবে। পাশাপাশি নাগরিক সচেতনতা বাড়াতেও নিতে হবে উদ্যোগ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর