সোমবার, ১৩ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

গণহত্যা দিবস

হানাদারদের প্রতি জাতির ঘৃণা দৃঢ়তর হোক

জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত প্রস্তাবে একাত্তরের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নৃশংস হত্যাযজ্ঞে নিহতদের স্মরণে এ দিনটি গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জাসদের সংসদ সদস্য শিরিন আখতারের উত্থাপিত প্রস্তাবে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা এবং আন্তর্জাতিকভাবে এ দিবসের স্বীকৃতি আদায়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। প্রস্তাবটির ওপর ৭ ঘণ্টা আলোচনার পর স্পিকার এটিকে ভোটে দিলে সংসদ সদস্যরা সর্বসম্মতিক্রমে তাতে সমর্থন জানান। প্রস্তাবটি পাসের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘের ঘোষণায় ‘জেনোসাইড’-এর যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে ২৫ মার্চ রাতে তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বাঙালির ওপর প্রয়োগ হয়েছে। তিনি প্রস্তাবটি সর্বসম্মতভাবে পাসের আহ্বান জানান এবং বলেন মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের চালানো গণহত্যার কথা যারা ভুলে যায়, তাদের বাংলাদেশে থাকার কোনো অধিকার নেই। যারা যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে দহরম মহরম করে, তাদেরও পাকিস্তানে চলে যাওয়াই ভালো। এই বাংলাদেশে তারা থাকলে, এ দেশের মানুষের ভাগ্য সবসময় দুর্ভাগ্যে পরিণত হবে। এ সময় সংসদ কক্ষে রাখা বড় পর্দায় একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর নির্মমতার বিভিন্ন স্থিরচিত্র ও ভিডিও দেখানো হয়। পিনপতন নীরবতায় অব্যক্ত চাপা কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে সংসদ কক্ষ। ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব সংসদে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হওয়ার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি জাতির দায়বোধের প্রকাশ ঘটেছে। যারা বাংলাদেশের ৩০ লাখ মানুষের মৃত্যু, এক কোটি মানুষের দেশান্তর, তিন লাখ নারীর সম্ভ্রমহানির জন্য দায়ী তাদের প্রতি ঘৃণা জিইয়ে রাখার জন্য প্রস্তাবটি তাগিদ সৃষ্টি করবে বলে আমাদের বিশ্বাস। ২৫ মার্চের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনেও সংসদে গৃহীত প্রস্তাবটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত হবে। বিশ্ববাসীর কাছে পাকিস্তান নামের জংলি রাষ্ট্রের স্বরূপ উন্মোচনেও ২৫ মার্চ দিনটির পরিচিতি ভূমিকা রাখবে এমনটিই প্রত্যাশিত। আমরা সংসদে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব গ্রহণকে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে দেখতে চাই। জাতীয় চেতনার জন্য যে বিষয়টি প্রাসঙ্গিকতার দাবিদার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর