সোমবার, ১৩ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

প্রশ্নপত্র ফাঁস

জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনুন

প্রশ্নপত্র ফাঁস এক জাতীয় লজ্জার নাম। এ লজ্জাজনক ঘটনায় শিশু ও তরুণ প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের কাছে দেশ ও সমাজের দায়িত্বশীলদের সম্পর্কে যে ভুল বার্তা পৌঁছে দিয়েছে তা কোনোভাবেই সুখকর নয়। সন্দেহ নেই প্রশ্নপত্র ফাঁস কোনো সরকার বা প্রশাসনের কাম্য হতে পারে না। এ অপকর্মের সঙ্গে সরকারের কারও জড়িত থাকার প্রশ্ন না উঠলেও তা রোধের ব্যর্থতা অবশ্যই তাদের ওপর বর্তায়। যে কারণে সরকার প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি এ যাবৎ এড়াতেই চেষ্টা করেছে। উটপাখি যেমন বালুতে মাথা গুঁজে মরু ঝড়কে অস্বীকার করার প্রবণতায় ভোগে তেমন একটি ব্যর্থ চেষ্টা তাদের মধ্যেও এ যাবৎ লক্ষ্য করা গেছে। তবে আশার কথা দেরিতে হলেও সরকার সে পথ থেকে সরে এসেছে এবং প্রশ্নপত্র ফাঁসের অপনায়কদের ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে যুক্ত নয়জনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুই শিক্ষক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে এসএসসির প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে রাজধানীর নামিদামি ডজনখানেক শিক্ষকের জড়িত থাকার বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তারা আইন প্রণয়ন করে এ ধরনের অপরাধ যাতে ভবিষ্যতে কেউ করতে সাহস পায় সে ব্যবস্থাই নিচ্ছেন। প্রশ্নপত্র ফাঁস দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য কলঙ্কের ঘটনা বলে বিবেচিত হচ্ছে গত কয়েক বছর ধরে। এ জঘন্য ঘটনায় শিক্ষকদের একটি অংশের জড়িত থাকার অভিযোগ সত্যিকার অর্থেই বিব্রতকর। শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় সাম্প্রতিক কালে কী ধরনের লোকজন যুক্ত হচ্ছে, এটি তার সুস্পষ্ট প্রমাণ। আমরা আশা করব, সরকার শুধু একটি চক্রের সদস্যদের পাকড়াও করে ক্ষান্ত হবে না, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত সবাইকে জাল দিয়ে ধরার চেষ্টা করবে। শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত যে সব নরকের কীট প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত তাদের পাকড়াওয়ের ক্ষেত্রে সাধারণ শিক্ষকরাও সক্রিয় হবেন—এমনটিও কাম্য। পেশার সুনামের স্বার্থেই দেশ ও জাতির সর্বনাশের ইন্ধন জুগিয়ে চলছে যেসব বিপথগামীরা, তাদের প্রতিহত করতে শিক্ষক সমাজকেই এগিয়ে আসতে হবে। এ অপকর্মের শেকড় উৎপাটনে কোচিং ব্যবসার ইতি ঘটাতেও নিতে হবে উদ্যোগ। অতীতের ভুল-ভ্রান্তি ঝেড়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে কোচিং ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রেতাত্মাদের কবল থেকে রক্ষা করতে সরকারের দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ ভূমিকার বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর