মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

সাবমেরিন যুগের সূচনা

ব্লু ইকোনমির উন্নয়নেও ভূমিকা রাখবে

স্বাধীনতা ও প্রতিরক্ষা একে অপরের অনুষঙ্গ। বাঙালি জাতির স্বাধীনতা এসেছে অনেক রক্তের বিনিময়ে। স্বাধীনতা সুরক্ষায় স্বভাবতই এ জাতির তাগিদও বেশি হওয়া উচিত। যে কারণে দেশের প্রতিরক্ষাকে সরকার অগ্রাধিকার দিচ্ছে প্রথম থেকেই। কোনো দেশের সঙ্গে যুদ্ধ কিংবা সংঘাত কাম্য না হলেও আক্রান্ত হলে আক্রমণকারীদের যাতে সমুচিত জবাব দেওয়া যায় সে জন্য প্রস্তুতি রাখা হচ্ছে সময়ের চাহিদা মনে রেখে। প্রতিরক্ষার প্রয়োজনে নৌবাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে ডেস্ট্রেয়ারসহ উন্নত যুদ্ধজাহাজে সজ্জিত করা হয়েছে। দুটি সর্বাধুনিক ডুবোজাহাজ নৌবাহিনীতে সংযোজনের মাধ্যমে ‘সাবমেরিন যুগ’-এ প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। দুনিয়ার যেসব দেশ সাবমেরিনের অধিকারী বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষায় জলসীমানার সবিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। দূর অতীতে এ জাতিকে যেসব আগ্রাসনের মোকাবিলা করতে হয়েছে সেসব হুমকি অনেকাংশে এসেছে জলসীমানা থেকে। আধুনিক যুগেও জাতীয় প্রতিরক্ষায় নৌবাহিনীর সক্ষমতার বিষয়টি প্রাসঙ্গিকতার দাবিদার। বাংলাদেশ যুদ্ধ নয় শান্তি— এই ভাবনা বুকে ধারণ করলেও কখনো কারও দ্বারা যাতে আক্রান্ত হতে না হয়, সে জন্য প্রতিরক্ষার চাহিদাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। গত রবিবার ডুবোজাহাজ ‘নবযাত্রা’ ও ‘জয়যাত্রা’র সংযুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। যারা সমুদ্রের উপরিভাগে ও আকাশে এবং সাগরতলেও যুদ্ধ করার সক্ষমতা রাখে। বাংলাদেশের শক্তিশালী নৌ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার পাশাপাশি অর্থনৈতিক স্বাধীনতার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশা করা যায়। সমুদ্রসীমায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের ব্লকগুলোর নিরাপত্তা রক্ষাসহ ব্লু ইকোনমির উন্নয়নে দুটি সর্বাধুনিক সাবমেরিন ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে আগামী দুই বছরের মধ্যে আরও ১১টি যুদ্ধজাহাজ যুক্ত হচ্ছে নৌবাহিনীতে। যার মধ্যে ৬টি তৈরি হচ্ছে নৌবাহিনী পরিচালিত খুলনা শিপইয়ার্ডে। অন্যগুলোর মধ্যে একটি যুক্তরাষ্ট্র ও চারটি চীন থেকে কেনা হচ্ছে। আমরা আশা করব, নৌবাহিনীতে সাবমেরিন যুগের সূচনা দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে আরও দায়িত্বশীল করে তুলবে। দেশের প্রতিরক্ষার পাশাপাশি জাতিসংঘের অধীনে শান্তিরক্ষায় তাদের সক্ষমতা আরও সুনিশ্চিত হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর