মঙ্গলবার, ২১ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নামছে

বিপদ থেকে রক্ষায় সতর্ক হতে হবে

বিশ্বে পানির উৎস প্রতিদিনই কমছে। পানি সংকটের মুখে পড়ছে মানব জাতি। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাকাশ সংস্থা (নাসা) বলেছে, পৃথিবীর ভূগর্ভে পানির যত মজুদ আছে তার এক-তৃতীয়াংশই মানুষের কর্মকাণ্ডের কারণে দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। ভূগর্ভের বাকি দুই-তৃতীয়াংশ পানির সঠিক পরিমাণ কত তা স্পষ্টভাবে জানা না থাকায় তা জানা এবং সে পানি কত সময় পর্যন্ত ব্যবহার করা যাবে তা বের করার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। নাসার মতে, পৃথিবীর ৩৭টি বৃহৎ পানির স্তরের মধ্যে ২১টির পানি ফুরিয়ে যাচ্ছে। এ স্তরগুলোর অবস্থান ভারত ও চীন থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের সীমানার মধ্যে। নাসা ১৩টি পানির স্তরকে আখ্যায়িত করেছে চরম সংকটাপন্ন হিসেবে— যেগুলো প্রায় শুকিয়ে গেছে। এ স্তরগুলো ব্যবহার উপযোগী করা অর্থাৎ প্রাকৃতিক উপায়ে স্তরগুলো পানিতে পরিপূর্ণ করার সম্ভাবনাও ক্ষীণ। পানির স্তর নিচে নামার বিপদ থেকে নদ-নদীর দেশ বাংলাদেশও মুক্ত নয়। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেই পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যাচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর আশঙ্কাজনকহারে নামছে নিচের দিকে। ওয়াসা সুপেয় পানির ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে ভূগর্ভস্থ স্তর থেকে পানি উত্তোলনে বাধ্য হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। রাজধানীর নদীগুলোর পানি মাত্রাতিরিক্ত দূষিত হয়ে পড়ায় তা পরিশোধন করে ব্যবহার করাও কঠিন হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় ভূগর্ভস্থ পানির ওপর যে বাড়তি চাপ পড়ছে তা অশনিসংকেত বলে বিবেচিত হচ্ছে। রাজধানীর পানির স্তর ক্রমান্বয়ে নিচে নেমে যাওয়ায় বিপদ সৃষ্টি হচ্ছে অন্য দিক থেকেও। বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু, তুরাগের দূষিত পানি ভূগর্ভের শূন্য স্থানে প্রবেশ করে নাগরিক জীবনের জন্য বিপদ ডেকে আনছে। এ ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহারকারীরা নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়ছে। বাংলাদেশ যে পানির সংকটের সম্মুখীন হচ্ছে তার প্রধান কারণ উজানে পানি প্রত্যাহারের ঘটনা। নদ-নদীর পানির ধারণক্ষমতা হ্রাসও এ বিপদের জন্য দায়ী। নদী দূষণ অবস্থাকে ভয়াবহভাবে বিপজ্জনক করে তুলছে। অস্তিত্বের স্বার্থে উজানে পানি প্রত্যাহার রোধে সরকারকে সক্রিয় হতে হবে। নদ-নদীর ধারণক্ষমতা বাড়ানো ও দূষণ বন্ধে নিতে হবে পদক্ষেপ। এ ক্ষেত্রে কোথাও হেলাফেলা কাম্য নয়।

সর্বশেষ খবর