মঙ্গলবার, ২১ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

ওষুধশিল্পের উত্থান

কাঁচামাল উৎপাদনে উদ্যোগ নিতে হবে

ওষুধশিল্পে বাংলাদেশ এখন এক সম্ভাবনার নাম। স্বাধীনতার পর দেশ যেসব ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার ঈর্ষণীয় সাফল্য দেখিয়েছে ওষুধশিল্পের নাম প্রথম সারিতে। স্বাধীনতার আগে বাংলাদেশ ছিল মূলত ওষুধ আমদানিকারক দেশ। গুটিকয় ওষুধ তৈরি হতো এ দেশে। কালের বিবর্তনে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ ওষুধ তৈরিতে সবচেয়ে এগিয়ে যাওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছে। নিজেদের চাহিদার সিংহভাগ পূরণ করার পরও ১০৯টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ। ওষুধশিল্পে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জিত হলেও প্রতিবন্ধকতাও কম নয়। বাংলাদেশের ওষুধশিল্পের কাঁচামালের ৩০ শতাংশ তৈরি হয় স্থানীয়ভাবে, বাকি প্রায় ৭০ শতাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। দেশে ওষুধের কাঁচামাল উৎপাদনের সুযোগ থাকলেও এযাবৎ তা ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে দেশ থেকে বছরে প্রায় ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ওষুধ রপ্তানি করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশ থেকে ২০১০-১১ অর্থবছরে ৪ কোটি ৬৮ লাখ ও ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৫ কোটি ৯৮ লাখ মার্কিন ডলারের ওষুধ রপ্তানি হয়। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে প্রায় ৭ কোটি ডলার ও ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৭ কোটি ২৬ লাখ ডলারের ওষুধ রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। ১৯৯২ সালে ইরান, হংকং, ভিয়েতনাম ও দক্ষিণ কোরিয়ায় পেনিসিলিন তৈরির কাঁচামাল রপ্তানি করে বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠান। পরবর্তী বছরে তারা ১৮ আইটেমের ওষুধ রাশিয়ার বাজারে রপ্তানি করার কৃতিত্ব দেখিয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ওষুধ উৎপাদনের জন্য ডব্লিউটিও থেকে ২০৩৩ সাল পর্যন্তু মেধাস্বত্ব আইন মানার বাধ্যবাধকতা থেকে ছাড় পেয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে নেতৃস্থানীয় ওষুধ রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্থানের যে সুযোগ রয়েছে তা কাজে লাগাতে হবে। সময় উপযোগী পরিকল্পনা গ্রহণ করে ওষুধের কাঁচামাল উৎপাদনে নিতে হবে উদ্যোগ; যা সম্ভব হলে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। বিশেষ করে গ্রামের মানুষ বা সাধারণ কৃষকের পক্ষে ঔষধি গাছপালা উৎপাদন করে আর্থিক সচ্ছলতার মুখ দেখা সম্ভব হবে। ওষুধশিল্পের সামনে যে সম্ভাবনা হাতছানি দিচ্ছে তা কাজে লাগাতে ওষুধের মানের ব্যাপারে হতে হবে আপসহীন। এ ব্যাপারে ওষুধ প্রশাসনের কড়া  নজরদারিও নিশ্চিত করতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর