শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা
বায়তুল মোকাররমের খুতবা

ইসলামের দৃষ্টিতে অবৈধ সম্পদ উপার্জনের ভয়াবহতা

মুফতি মুহিউদ্দীন কাসেম পেশ ইমাম, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ

ইবাদত কবুলের অন্যতম শর্ত হালাল রিজিক। শুধু ইবাদত কবুলের শর্তই নয়, বরং হালাল রিজিক আল্লাহর পক্ষ থেকে খাস রহমত-বরকতপ্রাপ্তির অন্যতম উপায়। আর রহমত-বরকত মানুষকে দুনিয়া-আখিরাতে সম্মানিত করে। পক্ষান্তরে অবৈধভাবে উপার্জিত সম্পদ শুধু ইবাদত কবুলের অন্তরায়ই নয়, বরং তা ইহকাল-পরকালে অপমানিত করে। হালাল রিজিক গ্রহণকারীর অন্তরাত্মা প্রশান্তি লাভ করে, পক্ষান্তরে অবৈধভাবে উপার্জিত সম্পদ আহারকারীর অন্তরে অস্থিরতা সৃষ্টি করে।

হারাম পথে উপার্জিত সম্পদ আহারকারীর ভয়াবহতা সম্পর্কে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে : হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রসুলে করিম ইরশাদ করেছেন, যে শরীর হারাম মাল দ্বারা লালিত তা জান্নাতে প্রবেশ করবে না।

অন্য বর্ণনায় হজরত ইবনে উমর (রা.) বলেন, যে ব্যক্তি ১০ টাকা দিয়ে কোনো কাপড় কিনল, যার ভিতর একটি ছিল হারাম টাকা, যতক্ষণ পর্যন্ত ওই কাপড় তার পরনে থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত তার নামাজ কবুল হবে না।

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে : হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলে করিম ইরশাদ করেন, কোনো বান্দা হারাম পথে উপার্জিত অর্থ দান-খয়রাত করলে তা কবুল হয় না। তা নিজ কাজে ব্যয় করলে তাতে বরকত পায় না। আর ওই সম্পদ উত্তরাধিকারীর জন্য রেখে গেলে তা তার জন্য জাহান্নামের পাথেয় বলেই বিবেচিত হবে। (মুসনাদে আহমদ। সূত্র : মিশকাত, পৃষ্ঠা-২৪২)।

অন্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে : হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মহানবী (সা.) বলেছেন হে সাদ! তোমার আহার পবিত্র বানাও, তাহলে তুমি মুস্তাজাবুদ দাওয়াত (যার দোয়া তত্ক্ষণাৎ কবুল হয়) হতে পারবে। কসম সেই সত্তার যার হাতে আমি মুহাম্মদের প্রাণ। বান্দা হারাম লোকমা নিজ উদরে নিক্ষেপ করলে চল্লিশ দিন পর্যন্ত তার কোনো আমল কবুল হয় না। বান্দার শরীরের সেই গোশত অবৈধ উপার্জন দ্বারা উৎপন্ন, জাহান্নামই তার উপযুক্ত স্থান।

ইমাম তাবরানি সূত্র ইমাম মুনজিরি হাদিস : ২৫৬৮ পৃষ্ঠা-৩৪৬। আল্লাহ রব্বুল আলামিন আমাদের অবৈধভাবে উপার্জিত হারাম সম্পদ থেকে হেফাজত করুন এবং বৈধ পথে হালাল উপার্জনের তৌফিক দান করুন। আমিন।

সর্বশেষ খবর