মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

সড়ক দুর্ঘটনা

ট্রাফিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিন

সড়ক দুর্ঘটনায় কিছুতেই লাগাম পরানো যাচ্ছে না। গত রবিবারই যন্ত্রদানব কেড়ে নিয়েছে অন্তত ২০ জনের প্রাণ। গত দেড় মাসে ৪২০ জনের জীবন কেড়ে নিয়েছে ঘাতক ট্রাক, বাস ও অন্য যন্ত্রদানব। দুর্ঘটনার সব তথ্য যেহেতু সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পায় না সেহেতু বলা যায় দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা আরও বেশি। আহতের সংখ্যাও যে কয়েক গুণ তা সহজেই অনুমেয়। যাদের একাংশকে সারা জীবন পঙ্গুত্বের অভিশাপে ভুগতে হবে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে সুস্থ হয়ে ফিরবে সেই নিশ্চয়তা পাওয়া দায় হয়ে পড়েছে। একাত্তরে দখলদার বাহিনীর আমলে জীবনের যে অনিশ্চয়তা ছিল, দল বা জোটবিশেষের আগুনসন্ত্রাসের রাজনীতিচর্চার সময়ে জনমনে অনিশ্চয়তার যে ছাপ লক্ষ্য করা গেছে, ভিন্ন প্রেক্ষাপটে ততটা না হলেও সড়ক দুর্ঘটনা আশঙ্কা সৃষ্টি করছে জনমনে। সড়কে মৃত্যুর মিছিল এবং এ নিয়ে খবরাখবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর জনমনে অস্বস্তি সৃষ্টি করছে। সড়ক দুর্ঘটনা মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি কেড়ে নিলেও তা কর্তৃপক্ষের নজর কাড়তে ব্যর্থ হয়েছে, এমন কথা বলা খুব একটা অমূলক হবে না। সড়ক দুর্ঘটনাজনিত অপরাধে যে আইন ছিল তাতে অপরাধীর জন্য কড়া শাস্তির বিধান থাকলেও তার কার্যকারিতা ছিল না বললেই চলে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, সে আইন আরও শিথিলের পাঁয়তারাও চলছে। সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী দেশের ট্রাফিকব্যবস্থার যাচ্ছেতাই অবস্থা। চালক, পথচারী সর্বত্রই আইন না মেনে চলার প্রবণতা এতটাই প্রকট যে, আতঙ্কিত না হয়ে পারা যায় না। বাস ও ট্রাক চালকরা তো সড়কপথে যথেচ্ছতা প্রদর্শনকে নিজেদের অধিকার বলে ভাবেন। দেশের যানবাহন চালকদের সিংহভাগই প্রশিক্ষণ ছাড়া গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পেয়েছেন। যানবাহনের তুলনায় ড্রাইভিং লাইসেন্সের সংখ্যা কম থাকা কোনো সুস্থতার প্রমাণ নয়। ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার দায়িত্ব যাদের তাদের মধ্যে সততার সংকট থাকায় প্রশিক্ষিত চালক হলেই ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যাবে সে নিশ্চয়তা নেই বললেই চলে। উেকাচের বিনিময়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার সুযোগ থাকায় কোনোরকমে গাড়ি চালাতে পারলেই যে লাইসেন্স মেলে তা এক প্রতিষ্ঠিত সত্যি। সড়ক দুর্ঘটনায় রাশ টানতে এ প্রবণতায় বাদ সাধতে হবে। ট্রাফিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার বিষয়টিও সমভাবে জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর