সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন দেশের সব আদালত, বিচারকদের বাসভবন ও আদালত-সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তা রক্ষায় সার্কুলার জারি করেছে। জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে জারিকৃত এই সার্কুলারের কপি পাঠানো হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সুচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব এবং পুলিশ ও র্যাবের শীর্ষ পদাধিকারীসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে। সার্কুলারে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আদালত ও আদালত-সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তার ব্যাপারে প্রধান বিচারপতির উদ্বেগের বিষয়টি জানানো হয়েছে। এ সার্কুলারের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে আদালত-সংশ্লিষ্টদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদানের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। জঙ্গিবাদ সভ্যতা ও মানবতাবিরোধী একটি মতবাদ। সভ্য সমাজে প্রচলিত বিচারব্যবস্থার সঙ্গে জংলি মানসিকতার প্রতিভূ জঙ্গিদের দ্বন্দ্বের বিষয়টিও সুবিদিত। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের বেপরোয়া উত্থান ঘটে বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলে। জেএমবির নেতৃত্বে ২০০৫ সালের সিরিজ বোমা হামলাসহ তৎপরবর্তী জঙ্গি তৎপরতা দেশের আদালতগুলোকেও টার্গেটে পরিণত করা হয়। জঙ্গি হামলা কেড়ে নেয় দুই বিচারককে। আহত হন আদালত-সংশ্লিষ্ট অনেকে। জেএমবির হিংস্র সংস্করণ নব্য জেএমবির কর্মকাণ্ড যখন প্রায়ই অনুভূত হচ্ছে তখন আদালত প্রাঙ্গণের নিরাপত্তার বিষয়টি প্রাসঙ্গিকতার দাবিদার। অসভ্য, বর্বর জঙ্গিবাদীদের সম্ভাব্য হামলা থেকে আদালত ও আদালত-সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তার বিষয়ে প্রধান বিচারপতির উদ্বেগ এবং এ উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের আশ্বাস রাষ্ট্রের দুই স্তম্ভের মধ্যে সুস্থ সম্পর্কের যে ইঙ্গিত দিচ্ছে তা প্রশংসার দাবিদার। আমরা আশা করব, জঙ্গিবাদের থাবা ঠেকাতে দেশের আদালত অঙ্গনের নিরাপত্তা রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আদালত-সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো তীক্ষ নজর রাখবে এমনটিও কাম্য। স্বাধীন বিচারব্যবস্থার অস্তিত্বের স্বার্থেই নিরাপত্তার বিষয়টি প্রাসঙ্গিকতার দাবিদার। এ ব্যাপারে নিরাপত্তার জন্য শুধু লোকবল নিয়োগ নয়, জাতির মনস্তাত্ত্বিক ঐক্যও গড়ে তুলতে হবে।