বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

প্রস্তাবিত পরিবহন আইন

বাস্তবায়নে আন্তরিক হতে হবে

সড়ক দুর্ঘটনার রাশ টেনে ধরতে নতুন আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। মন্ত্রিসভার বৈঠকে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৭ নামের প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দেশের পরিবহন খাত ১৯৮৩ সালের মোটরযান অধ্যাদেশ অনুসারে পরিচালিত হচ্ছে। প্রস্তাবিত আইনে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ড কিংবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রাখার দাবি উঠলেও খসড়ায় আমলে নেওয়া হয়নি। আইনের খসড়ায় দুর্ঘটনায় প্রাণহানি বা গুরুতর আহত হলে দণ্ডবিধির অপরাধ হিসেবে গণ্য করার কথা বলা হলেও দণ্ডবিধির কোন ধারার অপরাধ হবে তা উল্লেখ করা হয়নি। এর ফলে প্রাণহানির ঘটনায়ও নমনীয় শাস্তির সুযোগ থাকবে। স্মর্তব্য, দণ্ডবিধির ৩০৪(খ) ধারায় সড়ক দুর্ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি তিন বছরের কারাদণ্ড। চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব তারেক মাসুদ ও সাংবাদিক মিশুক মুনীরসহ পাঁচজনের প্রাণহানির ঘটনায় সারা দেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার পর ঘাতক বাসের চালকের বিরুদ্ধে ৩০৪ ধারাসহ পাঁচটি ধারায় মামলা করা হয়। কিন্তু পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের চাপে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই মামলার ধারায় পরিবর্তন আনে। মন্ত্রিসভা পরিবহন আইনের খসড়ায় অনুমোদন দেওয়ার পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, দণ্ডবিধিতে তিন রকম বিধান রয়েছে। নরহত্যা হলে সেক্ষেত্রে ৩০২ ধারা প্রযোজ্য হবে, যার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। আর খুন নয় এমন ঘটনায় ৩০৪ ধারা অনুযায়ী সাজা হবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। আর শুধু সড়ক দুর্ঘটনার জন্য ৩০৪(খ) ধারা অনুযায়ী তিন বছরের কারাদণ্ড। ছয় মাসের অধিক কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকার অধিক জরিমানা দণ্ডের অপরাধগুলোর জন্য বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করা যাবে। প্রস্তাবিত পরিবহন আইনে বাসচালকদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি নির্ধারণ করা হয়েছে, যা একটি ইতিবাচক দিক। প্রস্তাবিত আইন পরিবহন খাতে সুস্থতা ফিরিয়ে আনবে কিনা তা যথাযথ বাস্তবায়নের ওপর নির্ভরশীল।  সে ব্যাপারে সতর্কতা একান্তই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর