বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

ইউরোপ কি নব্য নাজিবাদের আগুনে পুড়ে মরতে চলেছে?

তুষার কণা খোন্দকার

ইউরোপ কি নব্য নাজিবাদের আগুনে পুড়ে মরতে চলেছে?

ইউরোপের রাজনীতি এবং ইউরোপবাসী সাদা মানুষের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি নব্য নাজিবাদে আক্রান্ত। শস্তা আশ্বাস এবং বিদ্বেষপূর্ণ স্লোগানকে পুঁজি করে নব্য নাজিবাদী দলগুলো রাজনীতির মাঠে যেভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সেটি সত্যি ভয়ঙ্কর ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিচ্ছে। গত শতাব্দীতে হিটলারের আদি নাজিবাদ  দুনিয়াকে যতখানি ভুগিয়েছে এবারের নব্য নাজিবাদ দুনিয়াকে তার চেয়ে বেশি ভোগাবে বলে আমার আশঙ্কা হচ্ছে। ত্রিশ দশকে পৃথিবীর দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক এবং সামরিক শক্তির যে বিন্যাস ছিল সেটি আজকের দুনিয়া থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।  সে সময় পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশ ইউরোপিয়ান কোনো দেশের কলোনি ছিল। যুদ্ধের ময়দান হিসেবে কলোনির বুকে ঝড় বয়ে গেলেও যুদ্ধে হারা-জেতার মালিকানা ইউরোপিয়ানদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। আজকের দুনিয়ায় দেশগুলো কেউ কারও কলোনি নয়। কাজেই নব্য নাজিবাদের উত্থানে কোন জাত কোন দেশ কীভাবে লাভবান হবে আর কোন দেশে রক্তগঙ্গা বইয়ে যাবে সেটা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন। গত শতাব্দীতে হিটলারের নাজিবাদের উত্থানের শুরুতে রাশিয়া এবং ইংল্যান্ড নিজেদের স্বার্থ চিন্তায় মোহগ্রস্ত হয়ে হিটলারের গুণগান করেছিল। শুরুতে ইংল্যান্ড ভেবেছিল, হিটলার স্ট্যালিনের সোভিয়েত ইউনিয়নকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে খাক করে দেবে আর তারা দূরে দাঁড়িয়ে আরাম করে আগুন পোহাবে। ওদিকে মস্কোতে বসে স্ট্যালিন ভাবছিল, হিটলার তার প্রতিবেশী দেশগুলোর কলোনি দখল করার লোভে যুদ্ধ শুরু করেছে। দুনিয়ায় তখন ইংল্যান্ড সবচেয়ে বেশি কলোনির মালিক। হিটলার যুদ্ধ করে ইংল্যান্ডের কলোনিগুলো কেড়ে নিতে পারলে ইংল্যান্ডসহ সবকটি পুঁজিবাদী দেশ মরণদশায় ধুঁকতে থাকবে আর মস্কো সেই মওকায় পশ্চিম ইউরোপে সমাজতন্ত্র রপ্তানি করে তার দখলদারিত্ব স্থায়ী করে নেবে। স্বার্থ হাসিলের মোহে অন্ধ হয়ে ইউরোপের রাজনীতিকরা শুরুতে নাজিবাদকে প্রশ্রয় দিয়েছিল যার দায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মধ্য দিয়ে তারা সুদে আসলে শোধ করেছে। ইউরোপের নেতৃত্ব সে সময় নাজিবাদের উত্থানে বিকৃত আনন্দ ভোগ করলেও আমেরিকার নেতৃত্ব নাজিবাদকে শুরু থেকেই প্রশ্রয় দেয়নি। সে সময়ের আমেরিকার নেতৃত্ব হিটলারের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছিল। হিটলারের তাণ্ডবে ইউরোপ যখন তছনছ হয়ে গেল তখন নাজিদের হাত থেকে বাঁচার জন্য ইংল্যান্ড আমেরিকাকে পাশে পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সংকটে অবশেষে আমেরিকাকে পাশে পেয়ে ইউরোপ এবং অন্যান্য দেশের মানুষগুলো সেই নিদানে পায়ের তলে মাটি পেয়েছিল, এটি ঐতিহাসিক সত্য। কিন্তু একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে দুনিয়ার প্রেক্ষাপট বদলে গেছে। সত্যি কথা বলতে কি, আমেরিকা নিজেই এখন ইউরোপের নব্য নাজিবাদের দোসর। দুনিয়াজুড়ে নব্য নাজিবাদের উত্থানে আমেরিকা নেতৃত্ব দিচ্ছে বললে সেটা অতিরিক্ত বলা হবে না।

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইউরোপ এবং আমেরিকান সমাজ থেকে গণতান্ত্রিক এবং মানবিক মূল্যবোধ হাওয়ায় মিলিয়ে গিয়ে সেখানে ঘৃণার রাজত্ব কায়েম হচ্ছে। বহু শতাব্দী ধরে অনেক বর্ণের অনেক ধর্মের মানুষ এ দেশ সে দেশ থেকে এসে জড়ো হয়ে মিলেমিশে যে আধুনিক ইউরোপ-আমেরিকা সৃষ্টি করেছিল সেটির অধিকার এখন শুধু সাদাদের দখলে ছেড়ে দিয়ে সবাইকে নাকি সেখান থেকে পাত্তাড়ি গুটাতে হবে। পশ্চিমা সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিভেদের সংস্কৃতি বাসা বেঁধেছে। সাদা রঙের ইউরোপ-আমেরিকাবাসী অন্য বর্ণের অন্য ধর্মের মানুষের প্রতি ঘৃণা ছড়িয়ে সেটার গালভরা নাম দিয়েছে ‘পপুলিস্ট পলিটিক্স’। শস্তা জনপ্রিয় স্লোগানের আড়াল নিয়ে পশ্চিমা দুনিয়ার রাজনীতিকরা এখন ভোটের রাজনীতিতে জেতার জন্য মরিয়া। এসব মৌলবাদী রাজনীতিকরা ভোটের রাজনীতিতে জিতে উদার ভালো মানুষ হয়ে যাবে— আমি সেটা বিশ্বাস করি না। বরং আমার মনে হচ্ছে, দুনিয়াটাকে ওরা গত শতাব্দীর তিরিশের দশকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাচ্ছে যে জমানায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ক্ষেত্র তৈরি হয়েছিল। পশ্চিমা দুনিয়ার লোভী রাজনীতিকরা রাজনীতি বাদ দিয়ে আগুন নিয়ে খেলতে নেমেছে। তাদের আগুন নিয়ে খেলার ভয়াবহ পরিণাম তারা কি আঁচ করছে সেটা আমাদের জন্য বোঝা কঠিন। তবে আমরা, তৃতীয় বিশ্বের অসহায় মানুষগুলো তাদের বর্বর আচরণ দেখে আতঙ্কে ভুগছি। কয়েক মাস আগে ভ্যাটিকানের পোপ পশ্চিমা দুনিয়ার মানুষকে শস্তা পপুলিস্ট পলিটিক্সের ভয়াবহতা সম্পর্কে সাবধান করেছেন। কিন্তু পপুলিস্ট পলিটিক্সের ভয়ঙ্কর পরিণাম নিয়ে পোপের সাবধানবাণী কেউ কানে তুলেছে বলে মনে হচ্ছে না। গত বছরের নভেম্বরে আমেরিকার নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার মধ্য দিয়ে সেখানে নব্য নাজিবাদী ধারণা জিতে গেছে। ট্রাম্প নির্বাচনের প্রচারণায় মুসলমান, মেক্সিকান, কালো— সবার প্রতি তীব্র ঘৃণা ছড়িয়ে তার পক্ষে ভোট টেনে নিয়ে প্রমাণ করেছেন, তার ঘৃণার রাজনীতি আমেরিকানরা গ্রহণ করেছে। এদিকে মার্চ মাসের ১৫ তারিখে হল্যান্ডে নির্বাচন। এদিকে মার্চ মাসের ১৫ তারিখে হল্যান্ডে নির্বাচন হয়ে গেল। ওখানে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মার্ক গুট্টে হয়তো সরকার গঠন করবেন। কিন্তু এতে ডাচ সমাজে উগ্র নাজিবাদীদের উত্থানের সম্ভাবনা কি শেষ হয়ে গেল? আমার কিন্তু সেটা মনে হয় না। হল্যান্ডের উগ্র ডানপন্থি পার্টি ফর ফ্রিডম ভোটের আগে জনপ্রিয়তা যাচাইয়ে বেশ এগিয়ে গিয়েছিল। ডাচদের একাংশ ওদেশের পার্টি ফর ফ্রিডমের নেতা গিয়ার্ট ভিলডার্সকে আধুনিক ডাচ নেতা হিসেবে উৎসাহ জোগাচ্ছিল কারণ তাদের যুক্তিতে ভিলডার্স সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে হল্যান্ডবাসীর স্বপ্নসাধ পুরা করার যোগ্যতা রাখেন। হল্যান্ডবাসী আদর করে ভিলডার্সকে ‘ডাচ ট্রাম্প’ বলে ডাকে। ডাচ ট্রাম্পের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতিগুলো শুনলে সভ্য মানুষ ভিরমি খাবে। মুসলিমবিরোধী নেতা ভিলডার্স ডাচবাসীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তিনি নির্বাচিত হলে মুসলমানদের হল্যান্ড থেকে বের করে দেবেন, ওদেশে কোরআন শরিফ ব্যান্ড করবেন এবং হল্যান্ডের আনাচে-কানাচে যেখানে যে কয়টি মসজিদ আছে তার সবকটি ধ্বংস করে দেবেন। এই কাজগুলো নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য তিনি হল্যান্ডকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবেন। ভিলডার্সের মুসলিমবিদ্বেষী প্রচার এবং নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির ফলাফল ডাচ মুসলমানরা এর মধ্যে পেতে শুরু করেছে। কয়েক দিন আগে নাজি প্রতীক স্বস্তিকা চিহ্ন ছাপা প্যাডে ওদেশের মসজিদের ইমামদের কাছে চিঠি গেছে। ওতে বলা হয়েছে, মুসলমানরা যেন অবিলম্বে হল্যান্ড ছেড়ে ভেগে যান। তা না হলে তাদের দুর্ভাগ্যের জন্য তারাই দায়ী হবেন। হল্যান্ডবাসীর সৌভাগ্য, ডাচ ট্রাম্প এবারের নির্বাচনে আশানুরূপ সিট পায়নি তবে নির্বাচনের পরে ভিলডার্স বলেছে, আমার মতাদর্শ ডাচ সমাজে গ্রহণযোগ্য কারণ আমার পার্টি পার্লামেন্টে ১৯টি সিট পেয়েছে। আগামী এপ্রিল মাসে ফ্রান্সে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সেখানেও মুসলিম বিদ্বেষ নির্বাচনী হাতিয়ার হিসেবে দারুণ জনপ্রিয়তার প্রমাণ দিচ্ছে। ফ্রান্সের আগামী নির্বাচনে ন্যাশনাল ফ্রন্ট পার্টি নেত্রী লে পেন এখন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। লে পেনের মুসলিম বিদ্বেষ তার জেনেটিক রোগ। মুসলিম বিদ্বেষের রাজনীতির রোগ উনি তার বাপ জন মারি লে পেনের কাছ থেকে পেয়েছেন। জনাব লে পেন তার মুসলিম বিদ্বেষের জন্য বরাবর পরিচিত। লে পেনের বাবা ন্যাশনাল ফ্রন্ট পার্টির নেতা জন মারি লে পেন পাঁচবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়াই করে প্রতিবার হেরেছিলেন। এবার তার মেয়ে যদি নির্বাচনে জিতে যান, তবে বুঝতে হবে, মারি লে পেন নির্বাচনে বারবার হারলেও তার মেয়ে জেতার মধ্য দিয়ে ফ্রান্সে মারি লে পেনের ঘৃণার রাজনীতি জিতে গেছে। বিদ্বেষের বিষে জর্জর ইউরোপে জার্মানির রাজনীতি আরেক অশনি সংকেত। ওখানে উদার রাজনীতিক অ্যাঙ্গেলা মেরকেল রাজনীতির মাঠে এখন কোণঠাসা। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে অ্যাঙ্গেলা মেরকেল হেরে গিয়ে পদ হারাবেন তেমন ভবিষ্যদ্বাণী করা না গেলেও সে দেশে উগ্র জাতীয়তাবাদী মুসলিমবিদ্বেষী পার্টি অলটারনেটিভ ফর ডয়েসল্যান্ড দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। হিটলারের নাজি পার্টির স্লোগান ছিল ‘আলেস ফুর ডয়েসল্যান্ড’ অর্থাৎ সব কিছুই জার্মানির জন্য। এএফডি পার্টির বর্তমান নেত্রী মিস পেট্রি ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে তার রাজনৈতিক এজেন্ডা সেভাবেই সাজিয়েছেন। আমার বিবেচনায় জার্মান নেত্রী মিস পেট্রি বর্তমান সময়ে হিটলারের নারী সংস্করণ। পশ্চিমা দুনিয়ার রাজনীতিতে ঘৃণা-বিদ্বেষের জয়জয়কারের কারণ কী? ইউরোপ এবং আমেরিকার নাজুক অর্থনীতি কি এই দুই মহাদেশের মানুষকে রক্তপিপাসু হিংস্র করে তুলেছে? অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিলে পরিস্থিতি তেমনই ইঙ্গিত করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে জার্মানরা ভয়ানক অর্থকষ্টে ছিল। মুদ্রাস্ফীতি এমন করুণ দশায় পৌঁছেছিল যে, লোকে বলত, জার্মানিতে কেনাকাটা করতে হলে ব্যাগ ভরে টাকা নিয়ে বাজারে যাও আর পকেট ভরে সদাই নিয়ে ফিরে এসো। হিটলার জার্মান জাতের দুর্দশার সুযোগ নিয়েছিল। সে সময় জরাজীর্ণ অর্থনীতি নিয়ে আতারে পড়া জার্মান জাতির মনে হিটলার সমৃদ্ধির অলীক স্বপ্ন জাগিয়ে দিয়েছিল। বলেছিল, যত নষ্টের গোড়া বর্বর ইহুদিরা। ইহুদি জাতটাকে মেরে-কেটে সাফ করে দিলে জার্মান জাতের কপালে মান্না-সালওয়ার মতো আসমান থেকে সুখ ঝরে পড়বে। আদতে হিটলারের উত্থানের আগে জার্মানির রাজনীতি কয়েকটা অথর্বের হাতে গাড্ডায় পড়েছিল। জার্মান রাজনীতিকদের ব্যর্থতার সুযোগে হিটলারের উত্থান ঘটেছিল। হিটলার তার স্বজাতির সমালোচনা করেনি। বরং রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার জন্য স্বজাতির অযোগ্যতার বোঝা ইহুদিদের কাঁধে চাপিয়ে দিয়ে হিটলার জার্মান জাতিকে ইহুদি নিধনে নামিয়ে দিয়েছিল।

নব্য নাজিবাদের মূলমন্ত্র ঘৃণা এবং বিদ্বেষ পুরনো নাজিদের মতোই তীক্ষ। তবে এবার নাজিদের হিংস্র বিদ্বেষের শিকার ইহুদি নয়, মুসলমান। গত শতাব্দীর তিরিশের দশকে জার্মানির নির্বাচনে হিটলারের বিজয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্ম দিয়েছিল। জার্মানির নির্বাচনে হিটলারের বিজয়ের কাফ্ফারা হিসেবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছে, কোটি কোটি মানুষ মৃত্যুর বাড়া ভোগান্তি ভুগেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইহুদি নিধনের কথা বারবার আলোচনায় এলেও মানুষের মনে রাখা উচিত, যুদ্ধে যারা মারা গেছে কিংবা ভোগান্তির শিকার হয়েছে, তারা সবাই ইহুদি ছিল না। দুনিয়ায় যে কোনো জায়গায় যুদ্ধ শুরু হলে সেটা সব ধর্মের, সব বর্ণের মানুষের জীবনে সর্বগ্রাসী সর্বনাশ ডেকে আনে। ইউরোপের রাজনীতিকরা এই চরম সত্য ভুলে গেছে। ধর্ম-বর্ণের ভেদ তুলে হিংসার রাজনীতি করলে ইউরোপ অর্থনৈতিক সংকট থেকে বেরিয়ে আর্থিকভাবে সচ্ছল হয়ে যাবে এটি তাদের অলীক কল্পনা। সব ধর্ম-বর্ণের মানুষকে তাড়িয়ে দিয়ে ইউরোপে খ্রিস্টান সাদা মানুষের রাজত্ব কায়েম হলে ইউরোপিয়ানরা সুখে থাকবে কিনা সেটি প্রশ্ন নয়, বরং তাদের ভাবা উচিত তেমন উদ্ভট ইউরোপের জন্ম হলে দুনিয়ার বুকে আদপে ইউরোপ নামের মহাদেশটি টিকে থাকতে পারবে কিনা। ইউরোপের অর্থনীতিতে কার কী ভূমিকা সেটি ঠাণ্ডা মাথায় বিচার করলে সামনের নির্বাচনগুলোতে ইউরোপবাসী সঠিক নেতৃত্ব নির্বাচিত করতে পারবে।

তাদের মনে রাখা উচিত, নব্য নাজিবাদীরা তাদের বিদ্বেষের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে ইউরোপবাসীর জীবন থেকে অভাব দূর করে সুদিন ফিরিয়ে আনতে পারবে না।  ১৯৪৫ সালে হিটলার এবং তার নাজি নেতৃত্বের পরিণাম থেকে শিক্ষা নিয়ে তাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব নির্বাচিত করলে ইউরোপিয়ানরা নিজেরাও বাঁচবে আমাদেরও বাঁচতে দেবে।  তা না হলে সম্মিলিতভাবে আমাদের সবার কপালে ভোগান্তি আছে।

লেখক : কথাসাহিত্যিক।

সর্বশেষ খবর