সিলেটের আতিয়া মহলের জঙ্গি স্থাপনায় সেনাবাহিনীর কমান্ডোদের পরিচালিত অপারেশন টোয়াইলাইট সফলভাবে সমাপ্ত হয়েছে। অভিযানে নিহত হয়েছে এক নারীসহ দুর্ধর্ষ চার জঙ্গি। যাদের একজন সন্দেহভাজন শীর্ষ জঙ্গি মুসা বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। আতিয়া মহলের অভিযানে জঙ্গিদের পেতে রাখা বোমায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা এবং র্যাবের গোয়েন্দা প্রধান জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন। তাদের কর্তব্য নিষ্ঠা ও আত্মত্যাগ দেশ ও জাতির শত্রু জঙ্গিদের নির্মূলকরণে যে অবদান রেখেছে তা প্রাতঃস্মরণীয় হওয়ার দাবি রাখে। স্বাধীনতার মাসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি চ্যালেঞ্জ সৃষ্টিকারী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সজাগ ভূমিকার কারণে রাজধানীতে দুই র্যাব স্থাপনা ও বিমানবন্দরে হামলার অপপ্রয়াস ব্যর্থ হয়েছে। তিন ঘটনায় অন্তত চারজন আত্মঘাতী বোমাবাজ প্রাণ হারিয়েছে। সিলেটের আতিয়া মহলের অভিযান শেষ হতে না হতেই মৌলভীবাজারের দুটি জঙ্গি স্থাপনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান তাদের নিরাপস মনোভাবের প্রতিফলন ঘটিয়েছে। জঙ্গিবাদ যেমন দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে তেমন শান্তি ও মানবতার জীবন দর্শন ইসলামকেও প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। ইসলামে আত্মঘাতী হওয়া সর্বাবস্থায় নিষিদ্ধ এবং কোনো ক্ষেত্রেই তা অনুমোদনযোগ্য নয়। কিন্তু ধর্মের বিকৃত ব্যাখ্যায় সম্বিৎ হারানো জঙ্গিরা একের পর এক আত্মঘাতী তত্পরতা চালিয়ে প্রমাণ করেছে জান্নাতি হওয়ার আশায় তারা জাহান্নামের পথই বেছে নিয়েছে। আমরা এ কলামে বারবার বলেছি— জঙ্গিরা যেহেতু ইসলামের অপব্যাখ্যার মাধ্যমে মানুষের মগজ ধোলাই করছে, সেহেতু বিপথগামিতা বন্ধে আলেম সমাজকে সক্রিয় হতে হবে। সন্তানদের বিপথগামিতার ক্ষেত্রে বাবা মা ও অভিভাবকদের দায় এড়াতে সন্তানের ওপর তাদের নজরদারি বাড়াতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে পরিকল্পিতভাবে ঘৃণা যাতে কোনো সরল বিশ্বাসী তরুণের মাথায় না ঢোকে সে ব্যাপারেও পরিবার ও সমাজের নজরদারি থাকতে হবে। আমরা স্বাধীনতার মাসে আলবদর, আলশামস ও রাজাকারদের বশংবদ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানকে স্বাগত জানাই।