বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা
ইতিহাস

আরব ঐক্যের রূপকার

হজরত আবু বকর (রা.) ছিলেন ঐক্যবদ্ধ আরবের রূপকার। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে, বিশ্বজয়ের আগে আরববাসীর প্রথম নিজেদের দেশই জয় করতে হবে অর্থাৎ নিজেদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি এ কাজেই প্রথম পদক্ষেপ নেন এবং তার পদক্ষেপ সফল হয়েছিল। সমগ্র আরব আবার সংঘবদ্ধ হয়ে উঠল। আপন জাতিকে একত্রিত ও সংঘবদ্ধ করে আবু বকর (রা.) এবার শত্রুদের প্রতি দৃষ্টি দিলেন। আরব ভূমিতে বেজে উঠল বিশ্ববিজয়ের দামামা। পরাজিত হলো বিরাট পারস্য বাহিনী, বিশাল বাইজানটাইন শক্তি। তার শাসনামলেই মরুময় আরবের সীমা অতিক্রম করে মুসলমানরা ইরাক ও সিরিয়ার ভূখণ্ডে নিজেদের বিজয় গৌরব বহন করে নিয়ে গেল।

হজরত আবু বকর (রা.) ‘শূরা’ বা মন্ত্রণা পরিষদের সাহায্যে কোরআন ও রসুলের সুন্নাহ মোতাবেক রাষ্ট্র পরিচালনা করতেন। মওলানা মুহম্মদ আলী বলেন, ‘রাজ্যকে দেশের আইনে এবং দেশের আইনকে জনগণের ইচ্ছার অধীন করে এবং পূর্ণ স্বাধীনতা ও সমানাধিকার দান করে আবু বকর (রা.) প্রকৃত গণতান্ত্রিক সরকারের গোড়াপত্তন করেন।’ তিনি যে গণতন্ত্রের বীজ বপন করেছিলেন হজরত ওমরের সময় তা পূর্ণতা লাভ করে। অসামান্য কৃতিত্ব ও যোগ্যতা দিয়ে আবু বকর (রা.) মহানবী (সা.)-এর পরেই ইতিহাসে নিজের স্থান সুপ্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। মওলানা মুহম্মদ আলীর মতে, ‘তার নম্রতা ও একনিষ্ঠ অনাড়ম্বর জীবন, মহান-নীতিজ্ঞান, ইস্পাতকঠিন সংকল্প, অবিচল অধ্যবসায় এবং সর্বোপরি অটল বিশ্বাস প্রভৃতি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের জন্য ইসলামের ইতিহাসে মহানবী (সা.)-এর পরেই তার স্থান।’ তার কৃতিত্ব সম্পর্কে অধ্যাপক মুর বলেছেন, ‘আবু বকরের খিলাফতকাল স্বল্পমেয়াদি হলেও মুহাম্মদ (সা.)-এর পর আর কারও জীবনে তার প্রচারিত জীবনবিধান এমন মূর্ত রূপ পরিগ্রহ করেনি।’ হজরত আবু বকর (রা.)-এর কৃতিত্ব ও চরিত্র-বৈশিষ্ট্যের প্রতি ইঙ্গিত করে হজরত ওমর (রা.) বলেছেন, ‘ইসলাম ও মুসলমানদের খেদমত করার বাস্তব নমুনা ও মাপকাঠি যদি এটাই হয়, যা আপনি প্রতিষ্ঠিত করেছেন তাহলে আপনার পরবর্তী লোকদের মধ্যে সম্মান ও মর্যাদা অর্জনের হিম্মত আর কারও হবে না।’ হজরত আবু বকর (রা.) ছিলেন একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্ব। তার সম্পর্কে বলা যায় যে, তিনি ইসলামের ইতিহাসে উপযুক্ত স্থানে এবং উপযুক্ত সময়ের উপযুক্ত ব্যক্তি ছিলেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর