মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

বরখাস্তের শিকার তিন মেয়র

তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত কাম্য ছিল না

রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন এবং হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়রকে বরখাস্ত করা হয়েছে গত বরিবার একই দিনে। এর মধ্যে রাজশাহী ও সিলেটের মেয়রকে দ্বিতীয়বারের মতো বরখাস্তের মুখে পড়তে হলো। উচ্চ আদালতের নির্দেশে দায়িত্ব হাতে নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তারা আবারও বরখাস্তের শিকার হলেন। হবিগঞ্জের মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন জেল থেকে। আদালতে জামিন পেয়ে দায়িত্ব গ্রহণের ১১ দিন পর তাকে বরখাস্তের মুখে পড়তে হলো। তিন মেয়রকে বরখাস্ত করার যে চিঠি দেওয়া হয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষ থেকে তাতে আদালতে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণকে কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে। দুই সিটি করপোরেশন এবং এক পৌরসভার মেয়রকে বরখাস্তের পেছনে যে কারণ দেখানো হয়েছে তার আইনগত বৈধতা নিয়ে আমাদের কোনো প্রশ্ন নেই। তবে দেশে যখন ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের অধিবেশন চলছে এবং বিশ্বের ১৩০টির বেশি দেশের সংসদ সদস্যরা তাতে অংশ নিচ্ছেন তখন তড়িঘড়ি করে তিন মেয়রকে বরখাস্ত করার উদ্যোগ, দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সম্পর্কে বহির্বিশ্বে প্রশ্ন সৃষ্টি করবে কিনা ভাবার বিষয়। আদালতের নির্দেশে মেয়রের চেয়ারে বসার কয়েক মিনিটের মধ্যে বরখাস্তের ঘটনা জনমনেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। সাধারণ মানুষ মেয়রদের বরখাস্তের পেছনে সরকারের অসহিষ্ণু মনোভাবকেই কারণ হিসেবে দেখছে, যা কাম্য হওয়া উচিত ছিল না। স্থানীয় সরকারকে বলা হয় জনগণের সরকার। যে সরকার ব্যবস্থার সঙ্গে এলাকাবাসীর সরাসরি সম্পর্ক থাকে। রাজশাহী, সিলেট ও হবিগঞ্জের মেয়ররা নির্বাচিত হয়েছেন জনগণের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতার কারণে। আদালতে তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের চার্জশিট গ্রহণ করা কোনোভাবেই দোষী সাব্যস্ত হওয়া নয়। আনীত অভিযোগগুলো যথার্থ কিনা তা আদালতের রায়েই প্রমাণিত হবে। তার আগে চার্জশিটের কারণে বরখাস্ত করার সুযোগ থাকলেও এ জন্য যে সময়কে বেছে নেওয়া হয়েছে তা মোটেও প্রজ্ঞাসম্পন্ন নয়। আমরা আশা করব গণতন্ত্র চর্চার স্বার্থে বিরোধী দল সমর্থিত নির্বাচিত প্রতিনিধিদেরও দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেওয়া হবে। সরকারের গণতান্ত্রিক ভাবমূর্তির স্বার্থেই যার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর