বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা
ইতিহাস

হজরত আবু বকর (রা.)

ইমানের দৃঢ়তা, ন্যায়পরায়ণতা, ধৈর্য প্রভৃতি হজরত আবু বকরের চরিত্রের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য ছিল। তার চরিত্র সম্বন্ধে ঐতিহাসিক উইলিয়াম মুর বলেন, ‘মুহাম্মদ (সা.)-এর মধ্যে যদি কপটতা থাকত, তাহলে তিনি কখনই এমন একজন মহানুভব ব্যক্তির বিশ্বাস ও বন্ধুত্ব লাভ করতে পারতেন না, যিনি শুধু বিচক্ষণ ও জ্ঞানীই ছিলেন না, সমগ্র জীবনে সরল ও নিষ্ঠাবান ছিলেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আবু বকরের খিলাফত স্বল্পমেয়াদি হলেও হজরত মুহাম্মদের (সা.) পর আর কারোরই জীবনে তার প্রচারিত জীবনবিধান এমন মূর্তরূপ পরিগ্রহ করেননি।’ রসুলে করিমের (সা.) ওফাতের পর তার পরিবারের ভরণপোষণের জন্য নির্দিষ্ট ‘ফিদক’ নামক সম্পত্তিটি কন্যা ফাতেমা স্বীয় উত্তরাধিকারে আনতে চাইলে আবু বকর (রা.) এ দাবি অগ্রাহ্য করেন এবং একে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তিতে পরিণত করেন। মুসলমানদের জাকাত প্রদান সম্পর্কে তিনি দ্ব্যর্থহীনভাবে একবার বলেছিলেন, ‘রসুলের (সা.) যুগে যেসব জিনিসের জাকাত দেওয়া হতো তার একটি রত্তিও আজ যারা দিতে অস্বীকার করবে, আমি তাদের বিরুদ্ধে জেহাদ করব এবং কেউ সঙ্গী না হলে আমি একাই তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব।’ এসব ঘটনা তার নিরপেক্ষতা এবং চারিত্রিক দৃঢ়তার পরিচয় বহন করে। গরিব, দুঃখী ও মজলুমদের কাছে তিনি ছিলেন করুণা ও দয়ার প্রতীক। আবু বকরের দানশীলতা আরবের বহু অসহায় ও নির্যাতিত মানুষকে মুক্তির পথ দেখিয়েছেন। তার অর্থে বহু ক্রীতদাস দুঃসহ জীবনের গ্লানি হতে পরিত্রাণ লাভ করেছিলেন। তিনি তার সব সম্পত্তি কওমের খেদমতে দান করেছিলেন। এ সম্বন্ধে ঐতিহাসিক জায়েদান বলেন, ‘তিনি ইসলাম গ্রহণ করার সময় ৪০ হাজার দিরহামের অধিকারী ছিলেন। ইসলামের জন্য তিনি এ অর্থ সম্পূর্ণ ব্যয় করেন।’ দুঃখী ও দুর্গতদের সাহায্যের জন্য তিনি রাত্রিকালে পথে পথে বিচরণ করতেন। দানশীলতা ও সত্যবাদিতার জন্য তিনি ‘আতিক’ এবং ‘সিদ্দিক’ নামে ভূষিত ছিলেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর